এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ২৫ নভেম্বর, ২০২২

বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে মিনু

রাজশাহীতে সমাবেশ সফল করা হবে

বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহীতে বিএনপির মহাসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নগরীর সাহেববাজার এলাকার একটি কনভেশন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিনু দাবি করে বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে রাজশাহী বিভাগে ব্যাপকভাবে গায়েবি মামলা ও নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে। এছাড়াও নতুনভাবে রাজশাহী মহানগরসহ বিভাগের জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডগুলোর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মিনু বলেন, দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরের মহামসমাবেশ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তবে সেসব সমাবেশে সরকারের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন বাধা দেওয়া, স্থল ও জলপথের সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ার পরও বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঠেকাতে পারেনি। সব বাধা অতিক্রম করে জনগণ গণসমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর গণসমাবেশ নিয়েও গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এ লক্ষ্যে কোনো ধরনের মামলা হয়নি। সেখানে ব্যাপক পরিমাণে জনসমাবেশ হয়েছিল। তবে সব বিভাগীয় শহরকে ছাড়িয়ে রাজশাহীর মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। এর জন্য তাদের যদি বুক থেকে তাজা রক্ত পিচঢালা পথে ঢেলে দিতে হয়, তাতে নেতাকর্মীরা রাজি আছেন। সব বাধা ও চক্ষু রাঙানিকে উপেক্ষা করে পুরো রাজশাহী নগরী মানুষে মানুষে ভরে যাবে।

লিখিত বক্তব্যে মিনু আরো বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য যখন তারা এ বিভাগের আটটি জেলা ও একটি মহানগরীর প্রায় ৬৭টি উপজেলা ও থানায় প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন, তখনি রাজশাহীতে সরকার বিএনপির ওপর নতুন মাত্রার অত্যাচার ও নির্যাতনের ফর্মুলা নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা ও থানায় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। বিভাগে এরই মধ্যে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। মিনু দাবি করে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন দ্বারা অকারণে বোমা ফাটানো হচ্ছে, বোমা রেখে দেওয়া হচ্ছে এবং অতঃপর সাজানো মামলা দেওয়া হচ্ছে। ফলে আমাদের লোকজন জানতেও পারছে না যে কী কারণে মামলা হয়েছে।

গত বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভাগীয় সমবেশের প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভায় পুলিশ অতর্কিত হামলা করে বিনা কারণে ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে উল্লেখ করে মিনু বলেন, বিএনপি কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে গোপনে বৈঠক করবে। এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাদিম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ চট্টগ্রাম, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে কোথাও বিএপির কর্মীরা কোনো ধরনের গ-গোল করেনি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন ছয়টি বিভাগের প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সরকার দলীয় পেটুয়া বাহিনীর হামলা ও আক্রমণের পর এবার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের আগে প্রশাসন ও পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতন ও ত্রাস এমন এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এলাকায় থাকতে পারছেন না। মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছে না। প্রশাসন ও পুলিশের এ রূপ বেআইনি নির্যাতন ও অত্যাচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান মিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও রাসিকের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। সংবাদ সম্মেলনে দলটির বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close