নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ নভেম্বর, ২০২২

জানতে চান হাইকোর্ট

রাজধানীর ফুটপাত লিজ দিচ্ছেন কারা

রাজধানীর ফুটপাত দখল করে বিক্রি ও লিজ দেওয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তালিকা তৈরির পরে গৃহীত পদক্ষেপ ও অন্যান্য বিষয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন সঞ্জয় মণ্ডল। আর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্বাস উদ্দীন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, অফিসার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি), ঢাকার উত্তর-দক্ষিণের দুই যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ও রাজধানীর ১৫টি থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আদালত।

এ ছাড়া আদালত অপর এক আদেশে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ফুটপাত দখল করে ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা প্রস্তুত করতে ৫ সদস্যের একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে দুই সিটি করপোরেশনের দুজন প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা, সিআইডির একজন কর্মকর্তা ও রাজউকের একজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি আদালতে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

একই সঙ্গে এ ঘটনায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য পরবর্তী দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইডস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা রিটের শুনানি করেন সংগঠনের সভাপতি ও আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

মনজিল মোরসেদ বলেন, ফুটপাত দিয়ে আমরা রাজধানীতে চলাচল করি। এগুলো দখল করে লিজ দেওয়া হচ্ছে। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এগুলো লিজ দিয়ে পয়সা ইনকাম করছেন। এতে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। এ বিবেচনায় আমরা রিট পিটিশন দায়ের করেছিলাম। ফুটপাতকে হকারমুক্ত করা এবং চলাচলের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আদালত সেটি শুনে রুল জারি করেছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন।

একটি জাতীয় দৈনিকে গত ২৪ আগস্ট ‘বিক্রি হচ্ছে ঢাকার ফুটপাত’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে রবিবার (২০ নভেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে রিটটি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হকার-পুলিশের মধ্যে চলে ‘উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা’ রাজধানীর সড়কের ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের চলাচলের সুযোগ কমে আসছে। অধিকাংশ ফুটপাত হকারদের দখলে। হকারদের কাছ থেকে দৈনিক চাঁদা, মাসিক চাঁদা তোলা হয়।

বলা হয়, কথাশিল্পী মঞ্জু সরকারের একই উপন্যাসের নাম ‘উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা’। ওই উপন্যাসের মতোই রাজধানীর ফুটপাত হকারমুক্ত করতে চলে উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা। একদিকে উচ্ছেদ করা হয়, অন্যদিকে ফের ফুটপাত দখল করে পসরা নিয়ে বসেন হকাররা। হকারদের বক্তব্য, নিয়মিত চাঁদা দিয়ে তারা ফুটপাতে দোকান করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close