মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

  ০৩ অক্টোবর, ২০২২

মাটির ঘরে শিক্ষা জাদুঘর

* ভবনটির প্রতিষ্ঠা ১৯৭৩ সালে * রয়েছে পুরোনো দিনের শিক্ষা উপকরণ * নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস তুলে ধরার প্রচেষ্টা

অর্ধশত বছরের পুরোনো মাটির ভবন, নানা রঙের আলপনায় দেওয়া হয়েছে নতুন রূপ। চৌচালা ঘরটি পূর্ণ বিভিন্ন পুরোনো উপকরণে। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে টিকে থাকা ভবনটিতে চালু হয়েছে ব্যতিক্রমী এক জাদুঘর। কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সীমান্তবর্তী রামধনপুর গ্রাম; এখানেই দেখা মিলবে ভিন্নধর্মী রামধনপুর শিক্ষা জাদুঘরের। অর্ধশতবর্ষী পুরোনো মাটির স্কুল ভবনকে রূপান্তর করা হয়েছে শিক্ষা জাদুঘরে।

জানা যায়, বাঁশের বেড়া ও ছনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ঘর নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালে রামধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করা হয় মাটির ঘর। ১৯৯৪ সালে নতুন ভবন নির্মাণ হওয়া পর্যন্ত মাটির এই ঘরেই চলত পাঠদান। নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ার কারণে মাটির ঘর পরিত্যক্ত হয়ে যায়। সেটাকে সংস্কার করে চলতি মাসেই এখানে চালু করা হয়েছে জাদুঘর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উঠেছে পাকা দুইটি ভবন। তার পাশেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চৌচালা মাটির ভবন। নতুন করে প্রলেপ দিয়ে, আলপনা এঁকে ঘরটিকে দেওয়া হয়েছে নতুন রূপ। মাটির এই ভবনে ঢুকতেই চোখে পড়বে কয়েক দশক আগের বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ।

মাটির ভবনে প্রতিষ্ঠিত এ জাদুঘরে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শিক্ষার নানা উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। জাদুঘরটিতে প্রদর্শিত হচ্ছে পুরোনো আমলের বই, ফাউন্টেন পেন, টাইপ রাইটার, ছাপা মেশিন, দোয়াত, কুপি, হ্যারিকেন, আলমিরা, পুরোনো মুদ্রা, ক্যামেরা ও নানা শিক্ষা উপকরণ।

জাদুঘরটিতে ঘুরতে আসা খুদে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, এখানে এসে নানা অচেনা জিনিস তারা দেখছেন, জানতে পারছেন ইতিহাসের নানা অজানা দিক সম্পর্কে। ইশরাত জাহান নামের এক খুদে শিক্ষার্থী বলেন, এই জাদুঘরটিতে আমরা অতীতের অনেক উপকরণ দেখেছি যা এখন আর দেখা যায় না। এতে আমরা অনেক কিছু জানতে-শিখতে পেরেছি। সামিউল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জাদুঘরটি আমাদের জ্ঞানের ভা-ার সমৃদ্ধ করছে। পুরোনো আমলের মুদ্রা, ক্যামেরা, টাইপ রাইটার অনেক কিছু এখানেই আছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্কুলটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের স্মৃতি। স্থানীয় কালাম মিয়া বলেন, এই স্কুলটির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আমাদের অঞ্চলের স্কুলে শিক্ষা জাদুঘর হয়েছে এতে আমরা আনন্দিত।

জাদুঘরের উদ্যোক্তা সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ বলেন, আমাদের এই প্রজন্ম যাতে অতীতকে ভুলে না যায় সেই চেতনা থেকে জাদুঘরটি তৈরি করা। নতুন প্রজন্মের সামনে ইতিহাস তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close