নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মানবতাবিরোধী অপরাধ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খলিলুর রহমানকে (৬৮) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন র‌্যাব-১৪ ও র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, খলিলুর রহমানের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুরের নোয়াগাঁও এলাকায়। মামলার নথি অনুযায়ী তিনি ১৯৭১ সালে ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি আলবদর বাহিনীতে যোগ দেন এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই খলিলুর পালিয়ে ছিলেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার রাতে তাকে সাভার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কমান্ডার বলেন, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল নেত্রকোনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত শুরু হয়। ওই মামলায় ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি খলিলুর রহমান, মো. আজিজুর রহমান, রমজান আলী, আশক আলী ও মো. শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে হত্যা, গণহত্যা, অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার বিচার চলাকালে কারাগারে চারজন মারা যান। ১৩ সেপ্টেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে খলিলুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, মামলার তদন্ত শুরু হলে খলিলুর পালিয়ে গিয়ে রাজধানীর দক্ষিণখান, তুরাগ, উত্তরা ও বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকতেন। তিনি দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতেন। এক বাসায় বেশিদিন থাকতেন না। গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। মাঝেমধ্যে পরিবারের সদস্যরা গোপনে তার সঙ্গে দেখা করতেন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার খলিল ১৯৭১ সালে ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চণ্ডীগড় ইউনিয়নের আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যায় জড়িত ছিলেন খলিল। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত ৪ জনের মধ্যে দুজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুট ও ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close