চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাবুলের আবেদন খারিজ

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি গ্রহণ এবং কারাকক্ষে তল্লাশির অভিযোগে নিরাপত্তা চেয়ে করা দুটি আবেদনও খারিজ করা হয়।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা বেগম এ আদেশ দেন। আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছিলেন তিনি।

মামলার আবেদনে বাকি যাদের বিবাদী করা হয়েছিল তারা হলেন, পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক বর্তমানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাহাড়তলী জোন) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক এবং খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা ও পিবিআইয়ের জেলা পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবির।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাবুল আক্তারের মামলার আবেদন খারিজ করেছে আদালত। বাবুল আক্তার সাবেক এসপি। একজন পরিদর্শকের পক্ষে তাকে নির্যাতন করার কোনো সুযোগ নেই। প্রায় ১ বছর ৫ মাস পর এসে তিনি অভিযোগ করেছেন। বাবুল আক্তার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আদালতে জামিন আবেদন করেছেন, তখন আদালতে অভিযোগ করেননি। আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, আসামি তার হত্যা মামলা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য এবং সুবিধা পাওয়ার জন্য এসব আবেদন করে বাঁচার চেষ্টা করছেন।’

এদিকে বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দীন বলেন, ‘বাবুল আক্তার ন্যায়বিচার পাননি, আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’

আদালত আদেশে উল্লেখ করে, বাবুল আক্তার অভিযোগ করেছেন, পিবিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে রিমান্ডে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। মাহমুদ খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি বাবুল আক্তার। আদালতের কাছে এটি পরিষ্কার হয়েছে, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টায় তিনি কতগুলো অভিযোগ সৃজন করেছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। আদেশে আরো বলা হয়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন-২০১৩-এর ১১ ধারা অনুযায়ী বাবুল আক্তারের মামলার আবেদন গ্রহণের বিষয়ে বিবেচ্য কিছুই পাওয়া যায়নি। ফলে এটি গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। একই আইনের ভিত্তিতে ২০০ ধারায় বাবুল আক্তারের জবানবন্দি গ্রহণেরও কোনো সুযোগ নেই।

গত ৮ সেপ্টেম্বর রিমান্ডে নির্যাতনের অভিযোগে ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তখনই মিতু হত্যায় বাবুল আক্তার জড়িত- এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথমে এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের ওপর। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close