জিয়াউদ্দিন রাজু

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ফাঁকা ময়দানে দলের প্রার্থীরাই প্রতিপক্ষ

আসন্ন ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৫০০ প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি, জেলা-উপজেলার শীর্ষ নেতা এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা। সর্বশেষ দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে জেলাপ্রতি একজন দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বেশকিছু জেলায় দলীয় সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এতে করে দলীয় ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের অনুসারীরা ভোটের মাঠে দ্বন্দ্বে জড়াতে পারে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতারা।

সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, দলের মনোনয়ন বোর্ডে ৩১ জেলা পরিষদে নতুন মুখ বেছে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা। বাকি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়নে দলীয় পরিবর্তন আসেনি। এর মধ্যে ১৯ জেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পথে। বাকি ৪২ জেলার মধ্যে ২৭টিতে দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলাগুলো হলো গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নরসিংদী, নড়াইল, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, চাঁদপুর, বগুড়া, পাবনা, মাগুরা, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, নোয়াখালী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পিরোজপুর, রাজবাড়ী, দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, খুলনা, শেরপুর, ঝিনাইদহ ও রংপুর। তারাই নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই নির্বাচনে যারা ভোটার, স্থানীয় সরকারের সেই জনপ্রতিনিধিদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে মাঠে থাকবেন ওই জনপ্রতিনিধিরাই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নছিম বলেন, ‘যে কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী আমরা কাউকে নির্বাচনে বসাতে পারব না। সবাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। তবে দলের প্রার্থীদের বিষয়ে দল কি সিদ্ধান্ত নেবে সেটা এখন বলার বিষয় নয়।’

তবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক নেতা জানান, স্থানীয় সরকারের অন্য নির্বাচনগুলোর মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে দল। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক বা না হোক, বিদ্রোহীদের দলীয়ভাবে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তবে বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে বসিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোনো তৎপরতা চালানো হবে না।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু দল করলে অবশ্যই দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে।

আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘বিদ্রোহীদের বিষয়ে আমরা আগের মতো কঠোর অবস্থানেই থাকব। তবে দলের পক্ষ থেকে তাদের বসিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। ’

গত বৃহস্পতিবার ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। রবিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রত্যাহার শেষে বোঝা যাবে শেষ পর্যন্ত কতজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close