প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ইউক্রেনের চার অঞ্চলে গণভোট

ভোটের জন্য দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে রুশ সেনারা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সাত মাসের মাথায় ইউক্রেনে নিজেদের দখলে থাকা চারটি অঞ্চলে গণভোটের আয়োজন করেছে রাশিয়া। উদ্দেশ্য, ওইসব অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করা। গত শুক্রবার এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই ভোট চলবে পাঁচ দিন। এদিকে অনুকূলে ভোট সংগ্রহ করতে ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে রুশ সেনারা। খবর বিবিসির।

এনারহোডার অঞ্চলের এক নারী বিবিসিকে বলেন, আপনাকে সেনাদের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আপনার জবাব তারা একটি শিটে লিখে নিয়ে যাবেন। ইউক্রেনের দক্ষিণ খেরসনে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোট সংগ্রহের জন্য শহরের মাঝখানে একটি ব্যালট বাক্স নিয়ে রাশিয়ার সেনাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, নিরাপত্তার কারণে দুয়ারে দুয়ারে ভোটের জন্য যাওয়া হচ্ছে। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, একচেটিয়াভাবে সশরীরে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৭ সেপ্টেম্বর। অন্য দিনগুলোয় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট সংগ্রহ করা হবে।

মেলিটোপোলের এক নারী বলেন, স্থানীয় দুই ‘সহযোগী’ দুজন রাশিয়ান সেনাকে সঙ্গে নিয়ে তার মা-বাবার ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। সেনারা তার মা-বাবাকে স্বাক্ষর করার জন্য একটি ব্যালট দেন।

ওই নারী আরো বলেন, “আমার বাবা (রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য) ‘না’ দিয়েছিলেন। আমার মা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘না’ ভোট দেওয়ার জন্য কী হবে? জবাবে সেনারা বলেছেন, ‘কিছু না’।”

ওই নারী জানান, রুশ সেনারা এখন তাদের ওপর অত্যাচার করবেন- এই ভেবে তার মা এখন বেশ উদ্বিগ্ন। ওই নারী আরো বলেন, একজনের জন্য একটি ব্যালটের পরিবর্তে পুরো পরিবারের জন্য একটি ব্যালট দেওয়া হচ্ছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। তবে রাশিয়া দাবি করে আসছে, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সম্পন্ন হবে। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে আপাতত পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ায় গণভোট শুরু হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটাভুটির মাধ্যমে এসব অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর সেখানে হামলার ঘটনা ঘটলে মস্কো দাবি করতে পারবে, পশ্চিমাদের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।

চলতি গণভোটের ফল রাশিয়ার পক্ষে গেলে ইউক্রেনের আরো ১৫ শতাংশ এলাকা এই ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর আগেও গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার ঘটনা ঘটে। সেটা ২০১৪ সালে।

সে বছর পুতিনের নির্দেশে প্রথমে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। পরে সেখানে গণভোটের আয়োজন করা হয়। রাশিয়ার ওই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এবারও এই ভোটকে ‘অবৈধ ও ভাঁওতাবাজি’ আখ্যা দিয়েছে ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close