প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রাশিয়ায় সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সদস্যদের তলব

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ পুতিনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ায় এ ধরনের সেনা সমাবেশের আয়োজন এবারই প্রথম পশ্চিমারা পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল অব্যাহত রাখলে শক্তি দিয়েই জবাব দেওয়ার হুশিয়ারি

মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেওয়া এক ভাষণে এই নির্দেশ দেন তিনি। এর মাধ্যমে ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য আরো সেনা মোতায়েন করতে পারবে রাশিয়া।

পুতিন এমন এক সময়ে এই ঘোষণা দিলেন যখন ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে পাল্টা আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। ইউক্রেনের সেনারা পাল্টা আক্রমণ রচনা করে রুশ বাহিনীর দখলকৃত কিছু অঞ্চল এরই মধ্যে পুনরুদ্ধার করেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার ২০ লাখ জনবল সম্পন্ন সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দেন। রাশিয়া এবং নিজের অঞ্চলগুলো রক্ষা করার জন্য এই ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় পুতিন দাবি করেন, পশ্চিমারা রাশিয়াকে ধ্বংস করতে চায় এবং ইউক্রেনে শান্তি চায় না। ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য, মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আমি আংশিক সৈন্য সমাবেশের বিষয়ে রুশ সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করা প্রয়োজন বলে মনে করি। এই নির্দেশনার ফলে যারা কোনো একসময় রুশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভবিষ্যতে যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর জন্য সেসব সৈন্যদের এখন যুদ্ধ করার জন্য ডেকে পাঠানো হবে।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য তিনি সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। তার লক্ষ্য পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলকে ‘মুক্ত করা’ এবং এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ ইউক্রেনের ‘দাস’ হিসেবে আর ফিরে যেতে চায় না।

পুতিন আরো বলেন, পশ্চিমারা পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলে জড়িত এবং সেসব কর্মকাণ্ডের ‘প্রত্যুত্তর দেওয়ার মতো প্রচুর অস্ত্র রাশিয়ার কাছে রয়েছে। এমনকি তিনি ভয় দেখানোর জন্য এসব বলছেন না বলেও জানিয়ে দেন।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যারা সামরিক বাহিনীতে এর আগে কাজ করেছেন, সেই সংরক্ষিত বাহিনীর সৈনিকদের সেনাবাহিনীকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার অনেক যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্যও তিনি বাড়তি তহবিল বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি দনবাসে যারা লড়াই করছেন, তাদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন পুতিন।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক এবং দোনেতস্ক এলাকাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে রাশিয়া। ২০১৪ সালে মস্কো আংশিকভাবে এই অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করে নেয়। তবে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো রুশ বাহিনীর এই দখলকে অবৈধ বলে মনে করে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রাশিয়া এখন দোনেতস্কের প্রায় ৬০ শতাংশ দখল করেছে এবং কয়েক মাস তীব্র লড়াই চলাকালে ধীর অগ্রগতির পরে জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় পুরো লুহানস্ক দখল করে নিয়েছে।

এদিকে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো সীমা অতিক্রম করেছে। পশ্চিমারা রাশিয়াকে দুর্বল, বিভক্ত ও ধ্বংস করার আহ্বান জানাচ্ছে। ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) সম্পূর্ণ মুক্ত, দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) আংশিকভাবে মুক্ত করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close