নুর নবী রবিন, চবি

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

চবির গেটে বারবার তালা কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা * ক্যাম্পাস হয়ে পড়ে অবরুদ্ধ, শিক্ষক স্টাফরা আটকা পড়েন * বন্ধ হয় শিক্ষা কার্যক্রম * ক্ষতিগ্রস্ত হন শিক্ষার্থীরা

ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল, দুপক্ষের মারধরসহ যেকোনো ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। ফলে শিক্ষক ও স্টাফদের বাস চলাচল করতে পারে না। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হন শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নতজানু নীতির কারণে হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনের নামে ফের কেউ গেটে তালা মেরে অবরোধ করলে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল গেটে গত ৯ মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে ১০ বারের বেশি তালা মেরেছেন আন্দোলনকারীরা এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার তালা দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বারবার গেটে তালা দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যপক মো. জাকির হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া। গবেষণা করা, জ্ঞান সৃজন ও বিতরণ করা। এই কাজে যদি কোনো বাধার সৃষ্টি হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ যারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন, তাদের নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতায় কৌশলের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগ আছে, সেখানেও কমিটি হয়। কিন্তু এখানে কেন এতবার ঝামেলা হচ্ছে? এটার একমাত্র কারণ এখানে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রশাসনের নতজানু নীতি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী এই ধরনের অবরোধ সম্পর্কে বলেন, যেকোনো বিষয়ে আন্দোলনের গণতান্ত্রিক অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের স্বার্থের যেমন সংযোগ থাকতে হয়, সেটার ওপর নির্ভর করে আন্দোলনের ধরন।

আমরা মনে করি শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তির দায় প্রশাসন এড়াতে পারে না। তবে এবার নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান জানিয়েছেন, এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ও পরিবহন দপ্তরের গেটে তালা দেওয়া যাবে না। যদি কেউ তালা দেয় তাহলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে কয়েকবার গেটে তালা দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বর্ধিত করার দাবিতে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাচল করতে পারেনি। ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষকদের কোনো বাস শহরে যায়নি। স্থগিত হয়েছে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং আরবি বিভাগসহ মোট ১০টি বিভাগে পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এরপর রাতে অবরোধ তুলে নিলে পরদিন মঙ্গলবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close