নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে মিয়ানমারের ব্যাখ্যা

সীমান্ত পরিস্থিতির জন্য দায়ী আরসা ও আরাকান আর্মি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মিয়ানমার থেকে গোলা এসে পড়া এবং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসার ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার। ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য আরাকান আর্মি ও রাখাইনের সশস্ত্র গেরিলা গ্রুপ আরাকান লিবারেশন স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) দায়ী করেছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ক’ নষ্ট করার স্বার্থে এই দুটি গ্রুপ মিলে সীমান্ত এলাকায় চলমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিউ উইন এ কথা বলেন। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের ফেসবুক পেজে এই বৈঠকের তথ্য প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জ ফিউ উইন বলেছেন, আরসাকে সঙ্গে নিয়ে আরাকান আর্মি গত ১৬ সেপ্টেম্বর তংপিউ (বাম) বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩১ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা দিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলার সময় তিনটি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে গিয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি আরাকান আর্মি ও আরসা ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তংপিউ (ডান) বিজিপির ৩৪ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা নিয়ে পৃথক হামলা চালায়। এ সময় ৯টি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গিয়ে পড়ে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন ওই দুটি ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করেছেন, আরাকান আর্মি ও আরসা বাংলাদেশ-মিয়ানমারের বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ককে’ নষ্ট করার উদ্দেশে হামলাগুলো চালিয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মিয়ানমার থেকে চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ক্যাম্পের একজন নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ পাঁচজন। এর আগে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল এসে পড়ার ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু এরপরও সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মর্টার শেল এসে পড়ে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ড থেকে একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। তার আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়ে। গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল বান্দরবানের ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়ার ঘটনায় পরদিন ২৯ আগস্ট দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ।

ওই সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আমরা ডেকেছি। একটা মৌখিক নোটের মাধ্যমে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close