মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি ও কোয়ার্টার দখল, বিক্রি

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে রেল বিভাগের পতিত জমি ও কোয়ার্টার দখল এবং বিক্রয়ের ধুম পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দখলদারদের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করায় এ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল মিলছে না।

রেলওয়ের পক্ষ থেকেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এর ফলে প্রায় প্রকাশ্যেই চলছে রেলের জমি ও কোয়ার্টার দখল।

১৮৭০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের বিশাল কারখানা স্থাপিত হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরে। ওই সময় রেল বিভাগ প্রায় সাড়ে ৮০০ একর ভূ-সম্পত্তি হুকুম দখল করে নেয়। রেলের বিশাল কারখানা স্থাপনের কারণেই নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের শহরে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিন ভাগ জমি ও ১ হাজার ৬০০ কোয়ার্টার দখলদারদের দখলে চলে যায়। ২০১৮ সালে এক উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দপুরে যোগদান করার পর রেলের কোনো জমি বা কোয়ার্টার কোনো দখলকারী দখল করতে পারেননি। প্রায় ২ বছর বন্ধ থাকে রেলের জমি ও কোয়ার্টার দখল ও বিক্রয় বা দখল হয়ে যাওয়া জমিতে স্থাপনা নির্মাণকাজ। কিন্তু তাকে সুকৌশলে অনত্র বদলি করে দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ সালে শরিফুল ইসলাম নামের এক কর্মকর্তা ওই অফিসে যোগদানের পর আবারও শুরু হয়ে যায় দখলদারদের সাবেক কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সৈয়দপুর শহরের মদভাটি সংলগ্ন ভাগার নামক এলাকায় শামিম নামের এক ব্যক্তি প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমিতে বিশাল বড় গোডাউন নির্মাণকাজ করে চলেছেন। ওই ব্যক্তির অবৈধভাবে গোডাউন নির্মাণের ব্যাপারে উপসহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী বরাবরে অভিযোগ দিয়েও দৃশ্যমান কোনো ফল মেলেনি।

এ ব্যাপারে রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দখলদার শামিমের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, স্থানীয় রেল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেই নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছি। রেল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা না হলে রেলের জমি দখল বা স্থাপনা নির্মাণ কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।

রেলওয়ের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে লাঠি দিয়ে ভূত তাড়ানো সম্ভব, সেখানেই যদি ভূত থাকে, তাহলে ভূত তাড়ানো অসম্ভব। ১৯৯৬ সালের পর যারা অবসরে গেছেন তাদের বরাদ্দকৃত কোয়ার্টারগুলোর বরাদ্দ বাতিল করে রেলওয়ের নিজ আয়ত্তে নেওয়ার কথা। কিন্তু রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সেগুলো কাগজ-কলমে দখলে থাকার কথা বলে শতাধিক কোয়ার্টার দখলদারদের কাছে অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তর করেছেন।

তারা আরো বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে সৈয়দপুর রেলওয়ের উন্নয়নে ৩ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। বরাদ্দকৃত ওই অর্থের মাধ্যমে উন্নয়নকাজ পর্যবেক্ষণ করার কথা উপসহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীর। কিন্তু তারা মাসে একবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেননি। এর ফলে বেশ কয়েকটি উন্নয়নকাজ চলছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব উন্নয়ন কাজে শিডিউল ও প্রাক্কলন নিয়ে তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন ও উপসহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close