গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

  ১৫ আগস্ট, ২০২২

স্বামী গ্রেপ্তার

সেই কলেজ শিক্ষিকার মরদেহ শয়নকক্ষে

সম্প্রতি ছাত্রকে বিয়ে করে আলোচিত-সমালোচিত সেই কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের (৪৫) মরদেহ রবিবার (১৪ আগস্ট) তার শোয়ারঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহনন করেছেন না কি, তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটি রহস্যাবৃত। নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাছিম আহমেদ জানান, তার স্বামী কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সহকারী অধ্যাপিকা খাইরুন নাহার কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে (২২) বিয়ে করেন। তাদের এই বিয়ের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর এই দম্পতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, নাটোরের বলারিপাড়া এলাকার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে নাহার ও মামুন দম্পতি বাস করছিলেন। তারা ৬ মাস আগে ওই বাসা ভাড়া নেন। রবিবার ভোরে স্বামী মামুন হোসেন জানান, তার স্ত্রী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অসম বয়সের প্রেম ও বিয়ে নিয়ে সামাজিক, পারিবারিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন ওই শিক্ষিকা।

ভাড়া বাসার দারোয়ান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে বাসায় ঢোকেন মামুন। আবার আড়াইটার দিকে বের হন। এ সময় কেন বের হচ্ছে- জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। পরে ভোর ৬টার দিকে মামুন ফিরে আসেন। এরপর মামুন আমাকে ডাকেন। আমি চারতলায় গিয়ে দেখি সিলিং ফ্যান থেকে নামানো মরদেহ। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে মামুনকে আটক করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘অসম প্রেমঘটিত ছাত্র-শিক্ষিকার বিয়ে নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। তার গলায় দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় সিআইডির স্পেশাল টিম তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আবু সাইদ বলেন, ‘সহকর্মী খাইরুন নাহারের মৃত্যুর খবরে প্রতিষ্ঠানের সবাই মর্মাহত। এটি যদি হত্যা হয়, তাহলে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

উল্লেখ্য, অধ্যাপক খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। বর্তমান স্বামী মামুন হোসেন উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর এন এস সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এটি খায়রুন নাহারের দ্বিতীয় বিয়ে ও সংসার।

খায়রুন নাহারের প্রথম সংসারে দুটি সন্তান আছে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে অনেক আগেই। সন্তান দুটি তাদের বাবার সঙ্গে থাকে। বিবাহবিচ্ছেদের পর খাইরুন নাহার কলেজে শিক্ষকতা করলেও একপ্রকার নিঃসঙ্গ ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তার অর্ধেক বয়সি মামুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি। এরপর তিনি মানসিকভাবে অনেকখানি ভেঙে পড়েন এবং নিভৃতেই থাকতেন। ঠিকমতো কলেজেও যেতেন না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close