প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৭ আগস্ট, ২০২২

বিশ্বে খাদ্য ও তেলের দাম আরো কমল

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৯৩ দশমিক ৮১ ডলারে নেমে আসে, যা গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর সর্বনিম্ন। তেলের পাশাপাশি কমেছে অনেক খাদ্যের দামও। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউক্রেনের বন্দর থেকে রাশিয়া অবরোধ তুলে নেওয়ার পর খাদ্যশস্যের চালান শুরু হওয়ায় দাম কমেছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর মার্চ মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। কারণ ‘পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি’ হিসেবে পরিচিত ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর অবরোধ করে রেখেছিল রুশ বাহিনী। ফলে কোনো শস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেন ছেড়ে যেতে পারছিল না। তখন বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দেয় এবং বেড়ে যায় খাদ্যের দাম। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বলেছিল, বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। পরে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি হলে সোমবার থেকে ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্যবাহী জাহাজ ছাড়তে শুরু করে। এরই প্রভাব পড়েছে খাদ্যের বিশ্ববাজারে এবং দাম কমেছে।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার খাদ্য মূল্যসূচক অনুসারে, জুনের তুলনায় জুলাই মাসে খাদ্যের দাম ৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে উদ্ভিজ্জ তেলের। গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে উদ্ভিজ্জ তেলের দাম কমেছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। অন্য দানাদার খাদ্যের মূল্যসূচকও গত এক মাসে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।

এফএও জানিয়েছে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি হওয়ার ফলে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো অবরোধমুক্ত হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববাজারে গমের দরপতন হয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো খাদ্যপণের দরপতনকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘খাদ্যের দাম অতি উচ্চপর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে দরপতন হয়েছে এবং ব্যাপারটিকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ খাদ্য গ্রহণের অধিকার সবার রয়েছে।’

তেলের দাম নিয়ে বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে পেট্রল-ডিজেল যত তাড়াতাড়ি দামি হয়, উল্টোটা হলে দাম তত দ্রুত কমে না। তার ওপর দাম কমার ধারা কত দিন বহাল থাকবে, তা নিয়েও সংশয় আছে। কারণ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর গোষ্ঠী ওপেককে জোগান বাড়াতে বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। রাশিয়াসহ বৃহত্তর ওপেক গোষ্ঠী জুলাই-আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে জোগান বৃদ্ধির হার তেমন একটা বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দাম আবার বাড়বে কি না- সেই প্রশ্নও থাকছে। কোভিডের শুরুতে সারা বিশ্ব যখন লকডাউনে, তখন অপরিশোধিত তেলের দর শূন্যেরও অনেক নিচে নেমে যায়। এতে তেল কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেলের দর প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেলে তেল কোম্পানিগুলোর পোয়াবারো হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close