কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ০৬ আগস্ট, ২০২২

ইউএনওর সই জাল : সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ইউএনওর সই জাল করে ৪২ জনকে সরকারি খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। এরপর সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া থানা ওসি মো. জসিম।

এদিকে, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তদন্ত দলের অপর দুজন সদস্য হলেন জেলা রেজিস্ট্রার মো. কামাল হোসেন ও কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রত্যেক ভূমিহীনকে দুই শতাংশ করে খাসজমি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে। যাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে, তাদের তালিকা প্রস্তুত করে ইউএনও স্বাক্ষর করেন এবং উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে নির্দেশ দেন। এ সুযোগে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির ইউএনওর তালিকা পাল্টে নিজে একটি তালিকা প্রস্তুত করেন এবং তাতে অতিরিক্ত ৪২ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। হুমায়ুন কবির তালিকা প্রস্তুত করে তাতে ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসান। পরে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তাদের অনুকূলে খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসের গত ২৮ মার্চে ইস্যু করা এক নম্বর স্মারকে ২২ জন ভূমিহীনের স্থলে ৩১ জন, ২৪ এপ্রিল দুই নম্বর স্মারকে ১২০ জন ভূমিহীনের স্থলে ১৩২ জন এবং ৯ মে তিন নম্বর স্মারকে ৫৩ জন ভূমিহীনের স্থলে ৭৪ জন ভূমিহীন দেখিয়ে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ১৯৫ জন ভূমিহীনের স্থলে ২৩৭ জনকে খাসজমির কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ৪২ জনের মধ্যে কারো নামে দুই একর, কারো নামে দেড় একর এবং কারো নামে তিন একর করে সরকারের ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে।

সার্ভেয়ার যে ৪২ জনের নামে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি ওই খাসজমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে এই ৪২ জনের নামে কোনো খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার তালিকা দেখে রেজিস্ট্রি করে দেবেন এটাই ছিল নিয়ম। সাব-রেজিস্ট্রারও তালিকা যাচাই না করে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। এজন্য সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close