চীনের ‘কৌশলগত’ মহড়ার মধ্যেই তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্বে সমুদ্রের দিকে রওনা হয়েছে মার্কিন রণতরী ইউএস রোনাল্ড রিগ্যান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ন্যান্সি পেলোসি সফর শেষে তাইওয়ান থেকে যাওয়ার পরই শুরু হয় চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শন। তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক কুচকাওয়াজ করছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) জানান, তাদের রণতরী ইউএস রোনাল্ড রিগ্যান তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্বে সাগরের দিকে যাচ্ছে। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও রয়টার্সের।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রণতরী এবং এর স্ট্রাইক গ্রুপ মুক্ত ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমর্থনে দক্ষিণ চীন সাগরে নির্ধারিত অপারেশনে যাচ্ছে। রোনাল্ড রিগ্যান নামের রণতরীর নেতৃত্বে থাকা কমান্ডার জর্জ এম উইকোফ বলেন, এ অভিযান অঞ্চলটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনে আমাদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে সহযোগিতা এবং মিত্রদের কাছে একটি সংকেত।

তাইওয়ানে ন্যান্সি পেলোসির সফরের জের ধরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তাইওয়ানের চারপাশের সাগরে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। মহড়া চলবে রবিবার পর্যন্ত। চীনের গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে ‘পুনর্মিলন অপারেশন’-এর জন্যই এই পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছিন্ন অংশ বলে দাবি করে চীন। তারা তাইপেকে বিশ্ব মঞ্চ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চায়। এছাড়া তাইপের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যেকোনো দেশের যোগাযোগের বিরোধিতা করে আসছে বেইজিং।

সামরিক ড্রিল নিয়ে যা জানা গেছে : চীনের সরকারি মিডিয়া জানিয়েছে, এই কুচকাওয়াজ হলো মূলত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। তবে সেই সময় গোলাবারুদ ছোড়া হবে। স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা থেকে তা শুরু হবে এবং রবিবার পর্যন্ত চলবে।

কিছু জায়গায় তাইওয়ানের সমুদ্রতটের ২০ কিলোমিটার দূরে এই ড্রিল হবে।

সরকারি ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে যা হয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র ছিল উসকানিদাতা।

এদিকে তাইওয়ান বলেছে, চীনের এই সামরিক ড্রিল আঞ্চলিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিপদের কারণ। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, চীন অযৌক্তিক কাজ করছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাইপেই সতর্ক। সব জাহাজ ও নৌকাকে বলে দেওয়া হয়েছে, ড্রিল চলার সময় তারা যেন সমুদ্রে না যায়। বুধবার চীনের যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে ঢুকে পড়েছিল বলে তাইপেই অভিযোগ করেছে।

পশ্চিমা দেশের নিন্দা : ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেপ বরেল চীনের এই সামরিক ড্রিলের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ড্রিলের কোনো যৌক্তিকতা নেই। জি৭-ও একই কথা বলেছে। তাদের মতে, এর ফলে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়বে।

"