নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

নির্বাচন সামনে রেখে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র জোরদার করা হচ্ছে। ২০১৪-এর নির্বাচনের আগেও চক্রান্ত করেছে, ২০১৮-এর নির্বাচনের আগেও করেছে আবার এখন নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসছে তখন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে, সেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যরা বুধবার (৩ আগস্ট) গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ চতুর্দিক দিয়ে আসবে এবং আসছে। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ। তাই এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না। উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করে রাখতে হবে। তিনি বলেন, যেখানে রাসেলকে (১০ বছরের ছোট্ট শিশু) পর্যন্ত খুন করল আর সেই পরিবারের হাত থেকে বেঁচে এসে সরকারে এলাম, সাফল্য এনে দিলাম, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিলাম- এটা অনেকেই পছন্দ করবে না। কাজেই তারা তৎপর আছে সারাক্ষণই। আমি জানি তাদের তৎপরতা অনেক বেশি। তাদের খবরও আমি রাখি, আমার তো অচেনা কেউ নেই। তারা তাদের চক্রান্ত করেই যাচ্ছে।

তিনি করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশনকে কেন্দ্র করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কৃচ্ছ্বসাধনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই স্যাংশনের ফলেই প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে এবং আমি জানি না কারা লাভবান হচ্ছে এই যুদ্ধে। লাভবান হচ্ছে অস্ত্র প্রস্তুত ও সরবরাহকারীরা। আর মরছে সাধারণ মানুষ, ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে সাধারণের আজকে কি মানবেতর জীবন। সেটাই সব থেকে দুঃখজনক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে কার কী লাভ হবে জানি না, তবে বাংলাদেশের মানুষের তো ক্ষতিই হবে। কারণ, আমরা তো এক একটা জিনিস টার্গেট করে কাজ করছি। যেমন বলেছি একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতা যে পদক্ষেপ শুরু করেছিলেন, আমি সেই দায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছি। এখন আরো ৫৬ হাজার ঘর তৈরি হচ্ছে (বিনামূল্যে বিতরণের জন্য)। তাহলে এখানে আর কোনো ভূমিহীন থাকবে না।

দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন খুঁজে বের করায় সরকারের পাশাপাশি তিনি তার দলের নেতাকর্মীদেরও দায়িত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, তারপরও আমি আলাদাভাবে খবর নিচ্ছি। রংপুরসহ বিভিন্ন বিভাগে আমাদের কৃষক লীগ এবং আওয়ামী লীগের যে নেতাকর্মী রয়েছেন, তাদের বলেছি- কোথায় কে ভূমিহীন-গৃহহীণ রয়েছেন তাদের খোঁজ করে তালিকা করতে হবে। এক একটা এলাকা ধরে আমাকে তালিকা দিতে বলেছি, যাতে কেউ বাদ না যায়। আমরা তাদের ঘর করে দেওয়ার পাশাপাশি জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব। কেননা, বাংলাদেশে একটা মানুষও আর ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না।

তার সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিলেও বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেবল আমরাই নই, এখন ইউরোপের দেশগুলো থেকে শুরু করে আমেরিকা পর্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয় করছে। কাজেই আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি ভবিষ্যতে যেন বিপদে না পড়তে হয়। তা ছাড়া, ১ কোটি মানুষকে আমরা স্বল্পমূল্যে খাবার দিচ্ছি অর্থাৎ কোনো মানুষ যাতে কষ্টে না থাকে সেটাই আমাদের চেষ্টা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একেবারে তৃণমূলের মানুষের উন্নতি ও তাদের পরিবর্তনে কাজ করছি। ওইভাবে কিন্তু আমাদের যাত্রা শুরু করেছি। গ্রামের সাধারণ গরিব মানুষগুলো, তাদের জন?্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন। কত অত?্যাচার সহ?্য করেছেন। জেল খেটেছেন। তাকে ফাঁসি দিয়ে হত?্যার চেষ্টা হয়েছে। তিনি কিন্তু এই মানুষগুলোর ভাগ?্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। আর সেটাই আমরা করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেবল উঠে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে প্রথম এলো করোনা। তারপর যুদ্ধ। এরপর স্যাংশন। পাল্টাপাল্টি স?্যাংশন। যার জন?্য আজকে সারা বিশ্বই অত?্যন্ত একটা দুঃসময়ের মধে?্য যাচ্ছে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। তার পরও বাংলাদেশ এখনো পর্যন্ত ভালো আছে। এক কোটি মানুষকে আমরা স্বল্পমূলে?্য খাবার দিচ্ছি। কোনো মানুষ যেন কষ্টে না থাকে, সেটা আমাদের চেষ্টা। সেটাই আমরা করছি। সেই প্রচেষ্টা আমরা নিচ্ছি। এটা করে যাব।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close