আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ছয় মন্ত্রির পদত্যাগ
ক্ষমতা ছাড়ার চাপে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় পদত্যাগের হিড়িক লেগেছে। গতকাল বুধবার পদত্যাগ করেছেন ৬ মন্ত্রী। আগের দিন পদত্যাগ করেন প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী। মূলত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতি আস্থা হারিয়েই পদত্যাগ করেছেন তারা। এতে ফের পদত্যাগের চাপে পড়েছেন বরিস। ভাগ্য তাকে আর কতদূর টেনে নিয়ে যাবে, সেটিই প্রশ্ন। খবর বিবিসির।
প্রধানমন্ত্রী বরিসের ওপর আস্থা নেই জানিয়ে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন তার কেবিনেটের প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। ১০ মিনিটের ব্যবধানে তারা পদত্যাগ করেন। শুধু পদত্যাগ করেই তারা ক্ষান্ত দেননি, প্রধানমন্ত্রী বরিসের নেতৃত্ব নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছেন। এরপরই হিড়িক লাগে পদত্যাগের। গতকাল বুধবার আরো অন্তত ৬ মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যে কর্মসংস্থানমন্ত্রী মিমস ডেভিস, সংস্কৃতিমন্ত্রী জুলিয়া লোপেজ, বাণিজ্যমন্ত্রী লি রোউলি, শিক্ষামন্ত্রী আলেক্স বারঘার্ট, লেভেল ও হাউজিংমন্ত্রী নেইল ও’ব্রায়েন এবং স্থানীয় সরকারমন্ত্রী কেমি বেডেনচ।
করোনার লকডাউনের মধ্যে মদের পার্টি করে দলের ভেতরে ও বাইরে হয়েছেন সমালোচিত, পড়েছেন পুলিশি তদন্তের মুখে। মাত্র এক মাস আগেই পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে কোনো রকম উতরে গিয়ে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রিত্ব। এরই মধ্যে উপনির্বাচনে তার ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে, দলের নেতৃত্বদান ও সরকার পরিচালনায় তার সামর্থ্য নিয়ে।
নানান বিপত্তি কাটিয়ে যখন নতুন করে সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ী হয়েছেন, ঠিক তখনই নতুন বিতর্ক উঠেছে বরিসকে নিয়ে।
গত ফেব্রুয়ারিতে কনজারভেটিভ এমপি ক্রিস পিঞ্চারকে ডেপুটি চিফ হুইপ নিযুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস। অভিযোগ উঠেছে, পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। আর সেটি জানা সত্ত্বেও পিঞ্চারকে নিয়োগ দিয়েছেন বরিস।
গত সপ্তাহে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় ফের দলের ভেতরেই সমালোচনার শিকার হন বরিস। টরি দলের অনেকে তার পদত্যাগও চাইছেন। আর বিরোধী লেবার পার্টি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস নানা দুর্নীতিতে জড়িত। তার প্রধানমন্ত্রী থাকার কোনো এখতিয়ার নেই।
পিঞ্চার বিতর্ক নিয়ে বরিসের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগ করেন মন্ত্রিসভার জুনিয়রসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। এরই মধ্যে পার্লামেন্টে টরি পার্টির উপনেতা বিম আফলামি, সলিসিটর জেনারেল আলেক্স চাক এবং আরো চারজন জুনিয়র মন্ত্রী। তাদের পদত্যাগের দুদিনের মাথায় মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন চ্যান্সেলর (অর্থমন্ত্রী) ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের পরই হিড়িক পড়ে মন্ত্রিদের পদত্যাগের।
বরিসের নিজ দলের এমপি ও সাবেক চিফ হুইপ অ্যান্ড্রু মিচেল বলেছেন, বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার চরিত্র বা মেজাজ কোনোটাই নেই। এখন শুধু একটিই প্রশ্ন, ঘটনা কত দূর গড়াবে।
"