নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ জুলাই, ২০২২

চতুর্থ ঢেউয়ের চূড়ায় দেশ

বিশ্বজুড়ে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। চীনের বেইজিং, সাংহাই থেকে শুরু করে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও চোখ রাঙাচ্ছে এ ভাইরাস। আবারও ভয়াবহ পরিস্থিতির আভাস দিচ্ছে অদৃশ্য এ শত্রু। দেশে চলছে করোনার চতুর্থ ঢেউ। শনাক্ত হার ছাড়িয়েছে ১৫ শতাংশ। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ হার ১০ শতাংশের ওপরে। ফলে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায়। এ অবস্থায় এখনো যারা টিকা নেননি, তাদের দ্রুত টিকা দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত) ১২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯০২ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আগের দিন এই সংখ্যাটি ছিল ১ হাজার ১০৫ জন। গত এক দিনে দেশে দুজন কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর এসেছে, আগের দিন ছয়জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

নতুনদের নিয়ে দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৯ জন হয়েছে। মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ১৬২ জন।

২৪ ঘণ্টায় ৩০৭ জন কোভিড রোগীর সেরে ওঠার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলো ১৯ লাখ ৮ হাজার ২৯৭ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়ে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। নতুন শনাক্ত ১ হাজার ৯০২ জনের মধ্যে ১ হাজার ৪৪০ জনই ঢাকা জেলার বাসিন্দা। দেশের ৪৬ জেলায় এক দিনে নতুন রোগী ধরা পড়েছে। এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করে সাধারণ মানুষকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমিত পরিসরে আবারও বিধিনিষেধ আরোপ করা যেতে পারে বলেও মত তাদের।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন মনে করেন, চতুর্থ ঢেউয়ের চূড়ায় রয়েছে সংক্রমণ; যা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কমতে শুরু করতে পারে।

পরিসংখ্যান বলছে, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে ৩০ শতাংশেরই বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। সংখ্যার হিসাবে যা ৯ হাজারেরও বেশি। তাই বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, প্রচলিত ভ্যাকসিনকে ফাঁকি দিতে সক্ষম ওমিক্রনের দুই সাব-ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি নাজুক পরিস্থিতির শিকার হতে হবে বয়োজ্যেষ্ঠ ও দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগে আক্রান্তদের।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এ বি এম আবদুুল্লাহ বলেন, যারা বয়স্ক (৬০ বছরের ওপরে) রোগী এবং যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। আর সংক্রমিত হলে তাদের মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।

মানবদেহে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের সাত থেকে আট মাস পর এর কার্যকারিতা অনেকাংশে কমে যায় জানিয়ে বর্তমান সংক্রমণের রাশ টানতে ব্যক্তিপর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close