নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০২ জুলাই, ২০২২

ঈদুল আজহার বাকি ৮ দিন

প্রস্তুত হাট, আসছে পশু

ঈদুল আজহার আর মাত্র ৮ দিন বাকি। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছে রাজধানীর স্থায়ী-অস্থায়ী ২২টি কোরবানির পশুর হাট। আসতে শুরু করেছে গরু, ছাগল, মহিষসহ কোরবানির পশু। তবে এখনো ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

সাধারণত ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (উত্তর সিটি ১০টি ও দক্ষিণ সিটি ১২টি) হাট ইজারা দেওয়ার পর থেকেই বাঁশ, টিন, টেরপাল রঙিন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে হাটগুলো। প্রস্তুত করা হয়েছে হাসিল আদায়ে স্বেচ্ছাসেবীদের।

এ বছর পশুর দাম বেশি থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, এ বছর পশুখাদ্যের দাম বাড়তি থাকায় কোরবানির পশু পালনে প্রচুর খরচ হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ ও উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবও পড়বে পশুর হাটে।

সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট, আমুলিয়া, আফতাবনগর, উত্তরা ১৭ নম্বরসহ সবগুলো হাট সাজানো হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে পশু রাখার খুঁটি, অস্থায়ী শেড ও হাসিল ঘর। আকর্ষণীয় ডিজাইনে সাজানো হয়েছে হাটের প্রধান ফটক ও বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ী ও খামারিরা ট্রাকভর্তি পশু আনছেন হাটগুলোতে।

বুধবার রাতে গাবতলী হাটে কোরবানির পশু নিয়ে আসা ব্যবসায়ী আজাদ আলী বলেন, ‘গাবতলী হাটে আমার দুটি শেড আছে। গরু আছে ২০০। পাশাপাশি মহিষ ও দুম্বাও আছে। এখনো কোরবানির হাট জমে উঠেনি। তবে আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে ক্রেতা আসতে শুরু করবে।’

আজাদ আলী বলেন, সিলেট ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা চলছে। অনেক জেলার খামারিদের প্রচুর গরু মারা গেছে। খাবারের অভাবে অনেকে অল্প টাকায় গরু-ছাগল বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাই কোরবানির সময় এবার পশুর দাম বেড়ে যাবে। এ ছাড়া এমনিতেই গরুর খাবারের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। তাই গরু-ছাগলের দামও বাড়বে।

আরেক ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে। হাটেই নিয়মিত তিনজন রাখালসহ ৫-৬ জনের শ্রম যাচ্ছে। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা দিতে হয় রাখালদের। গরুর দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।’

খামারি ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এ বছর ভারতের গরু আসছে না, তাই তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না। ভারতীয় পশু বন্ধের দাবি জানান তারা। ভারতীয় গরু চোরাচালান বন্ধের দাবি জানিয়ে গরু ব্যবসায়ী সোহেল বেপারী বলেন, ‘২০ বছর ধরে এ কোরবানির হাটে পশু নিয়ে আসছি। কিছু সময় গেছে, সে বছর হয়তো মূলধনের টাকাও তুলতে পারিনি। আবার কোনো বছর এক হাটে দুই ঈদের আয় করেছি। এবারও ভালো দামের আশা করছি। ভারতীয় পশু এলে আমাদের (পশু ব্যবসায়ী ও খামারি) ক্ষতি হবে। আমরা সারা বছর হাটের উদ্দেশে পশু পালন করি।’

হাটে আসা কোরবানির পশুরগুলো মধ্যে দেখা যায়, ছোট ও মাঝারি আকারের পশু বেশি। তবে দামের দিক দিয়ে বড় সাইজের গরুর দাম কিছুটা কম থাকলেও ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর দাম বেশি।

গাবতলী পশুর হাটের পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন বলেন, হাটের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া শেষ। কোরবানির হাট নিয়ে কোনো বিষয়েই গাফিলতির সুযোগ নেই। হাটে ব্যবসায়ীদের টাকা জমা দেওয়ার ভোগান্তি কমাতে এবার কমপক্ষে ৫০টি হাসিল কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া হাটে দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। হাটের পশুর চিকিৎসা আর ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় বসানো হয়েছে আলাদা চেম্বার। থাকবে পশু চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। এ ছাড়া জাল টাকার লেনদেন প্রতিরোধে প্রতিটি কাউন্টারে মেশিন থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close