জামালপুর প্রতিনিধি
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির বিরুদ্ধে। এই ঘটনা সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তর অভিযোগ প্রেরণ করা আছে। তবে এই অভিযোগের যিনি কেন্দ্রবিন্দু সেই শিক্ষক ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে জানিয়েছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আনীত অভিযোগ সঠিক না।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৫/০৯/২০১৯ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ১৬টি পদের জন্য ৩৩ জন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী তার উল্টো শর্তের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রমের অভিযোগ আছে অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সমাজকর্ম বিভাগের (গ্রেড-৬) পদের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে শর্ত দেওয়া হয়েছিল ওই পদের জন্য সর্বোচ্চ বয়স হতে হবে ৩৫ বছর। সেখানে ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তার বয়স হলো এসএসসি/দাখিল পাস পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী ৪৫ বছর। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে ওই পদের জন্য চাওয়া হয়েছিল ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি পাস। কিন্তু সেখানে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখা গেছে ৩ বছর মেয়াদি ডিগ্রির। বিজ্ঞপ্তিতে বিষয় সংশ্লিষ্ট পিএইচডি ডিগ্রি থাকতে হবে বলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে ওই নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের রয়েছে নাটক ও নাট্য বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ। এ ছাড়া কাগজপত্র সত্যায়িতের ক্ষেত্রে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার তথ্যও রয়েছে। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কীভাবে একটি পাবলিক বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় এ নিয়ে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ সচেতন মহলের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এ ব্যাপারে বলেছেন ড. এইচ এম মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে পারা যায় না, তিনি খুব চতুর প্রকৃতির লোক। ড. মাহবুবুর রহমান এত ত্রুটিযুক্ত কাগজ নিয়ে কীভাবে নিয়োগ পেল তা এখন ওপেন সিক্রেট। এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার আবদুল মান্নান বলেন, এ এইচ এম মাহবুবুর রহমানের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি আমার যোগদানের আগে হয়েছে। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া আছে। এতে দাখিল পাসের সনদ টেম্পারিং এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পিএইচডি না থাকার বিষয়টি উল্লেখ আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে বিশ্বিবিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ড. খান মো. অলিয়ার রহমান বলেন, ‘এই নামের একজন শিক্ষককে আমি যোগদানের আগেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কাগজ জাল-জালিয়াতির বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য স্যারের কাছে গেলে জানা যেতে পারে। এ ব্যাপারে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বিবিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমানের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবেই করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি মফস্বল এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সব পদে যোগ্যতা সম্পন্ন কোনো শিক্ষকের আবেদন না পাওয়ায় দু-একটি পদের জন্য যোগ্যতা শিথিল করা হয়েছে। তবে বেনামি একটা অভিযোগ সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছে পৌঁছানো হয়েছিল। ওই অভিযোগটি সিন্ডিকেট সদস্যরা আমাকে আমলে নিতে না করেছেন।
"