নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ মে, ২০২২

পদ্মা সেতুর টোল ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি

পদ্মা সেতুর টোল হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফেরির তুলনায় টোলহার দেড় গুণ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে পড়বে বলে মনে করেন তারা। তাই তারা টোলহার পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আগামী জুনের শেষেই খুলছে পদ্মা সেতু। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সড়কবাতি লেগেছে এপ্রিলেই, পিচণ্ডঢালাইয়ের কাজও শেষ দিকে। রোড মার্কিংসহ আনুষঙ্গিক কাজও শেষ হচ্ছে শিগগিরই।

গত মঙ্গলবার পদ্মা সেতুতে যানবাহনের টোল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সর্বনিম্ন টোল মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা। এ ছাড়া, প্রাইভেট কার ৭৫০, পিকআপ ১২০০, মাইক্রোবাস ১৩০০, ছোট বাস ১৪০০, বড় বাস ২৪০০, ছোট ট্রাক ১৬০০, মাঝারি ট্রাক ২৮০০ টাকাসহ মোট ১৩ ধরনের যানবাহনে টোল নির্ধারণ হয়েছে। সেতু উদ্বোধনের দিন থেকেই আদায় হবে টোল। এর হার ফেরি পারাপারের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিজেদের টাকায় তৈরি সেতুতে টোলহার আরো কম হওয়া দরকার ছিল।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ঘোষিত টোল হারে ফেরির তুলনায় সেতুতে একটু বেশি খরচ পড়বে।

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী পরিবহনের চালক রহমত উল্লাহ বলেন, প্রায়ই ঘাটে এসে যানজটে পড়ে থাকতে হয়। সেতুর টোল কিছুটা বেশি হলেও দ্রুত যাতায়াত করতে পারব। আমাদের তেমন সমস্যা হবে না। তবে যাত্রীদের ভাড়ার পরিমাণ একটু বেড়ে যাবে। এখন মাদারীপুর থেকে ঢাকার নয়াবাজার জনপ্রতি ভাড়া ২৫০ টাকা, টোল বাড়ায় ভাড়া অন্তত ৫০ টাকা বেড়ে যাবে। আরেকটু কম হলে ভালো হতো।

জুয়েল হাওলাদার নামের এক যাত্রী বলেন, ফেরির চেয়ে সেতুতে টোল বাড়ানো ঠিক হয়নি। আমাদের কাক্সিক্ষত পদ্মা সেতু হয়েছে এটা খুবই ভালো দিক। তবে টোলের যে হার দেখলাম এতে আগামীতে আমরা চলাচল নিয়ে চিন্তিত। কারণ ভাড়া বাড়িয়ে দেবে দ্বিগুণ। এদিকেও সড়ক বিভাগকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যাতে আগের ভাড়ার চেয়ে কিছুটা বাড়ানো হয়, আকাশচুম্বী যেন ভাড়া বাড়ানো না হয়।

মোটরসাইকেল চালক সুমন আহমেদ বলেন, ঘাটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। এবার ঈদে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, তার চেয়ে টোলে একটু ভাড়া বেশি হলেও দুর্ভোগ তো কমল। আমাদের দীর্ঘ দিনের দুঃখ ঘুচবে। তারপরও টোলের হার আরো একটু কমানোর দাবি জানাচ্ছি। বাস-ট্রাকের যে পরিমাণ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। টোলের হার আরো কমানোর বিষয় সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।

ফেরিঘাটের ট্রাক শ্রমিক সমিতির সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, ফেরির চেয়ে প্রতিটি যানবাহনে বেশি মূল্য ধরা হয়েছে। বিষয়টি ঠিক হয়নি। আমরা চাই, সেতুর জন্যে নির্ধারিত টোলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করবে সেতু ও সড়ক বিভাগ।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, অর্থনীতিতে দীর্ঘ মেয়াদে সুফল পেতে বড় সেতুতে টোল হার কমানোর কোনো বিকল্প নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close