নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ মে, ২০২২

বাজার দর

নিত্যপণ্যের বাজার আবার বেসামাল

আবার বেসামাল হয়ে পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজার। সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির পর গেল কয়েক দিনে সংকট কিছুটা কমেছে। তবে পেঁয়াজ আমদানির মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পণ্যটি আসা বন্ধ রয়েছে। এতে দেশের খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া সবজি, রসুন ও ডিমের দাম এক সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে। অন্য পণ্যের দাম অবশ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য মিলেছে।

ঈদের পর বাজারে সবজির চাহিদা বেড়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি থাকায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি দরে মিষ্টিকুমড়া, মুলা ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এ সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি দরে শসা, টমেটো, চিচিঙ্গা, পটল, বরবটি ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা এবং লাউ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৩০ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম ২৫-৩০ টাকা থেকে কয়েক দফা বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। প্রতি কেজি দেশি রসুনের দাম ৪০-৫০ টাকা থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আমদানি করা রসুনের দাম কেজিপ্রতি ১০০-১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২২০-২৫০ টাকায়, পাম অয়েল কেজিপ্রতি ১৯৫-২০০ টাকায় এবং বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৯৮০-৯৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০-৩১০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫ টাকা, প্রতি ডজন হাঁসের ডিমের ১৬০ টাকা এবং প্রতি ডজন দেশি মুরগির ডিম ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি রুই মাছ ৩০০-৮৫০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছ কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা, প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৩০০-৪০০ টাকা এবং শোল মাছ প্রতি কেজি ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, মুন্সীগঞ্জের পদ্মাপাড়ের মাওয়া মৎস্য আড়তে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ইলিশ কিনতে আসাদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। চাহিদা বেশি থাকার সুযোগে পদ্মা পাড়েই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে আগুন দামে। দুদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। এতে ক্রেতাদের ক্ষোভ। বিক্রেতারা বলছে, সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে দাম। ইলিশ কিনতে আসা সাইফুল্লাহ বলেন, ইলিশের দাম শুনে মাথায় হাত। বাজারভর্তি ইলিশ কিন্তু দামের ব্যাপারে এক চুল ছাড় নেই।

আরেকজন ক্রেতা আরজ আলি বলেন, ইলিশের বাজারে যেটা হচ্ছে সেটাকে মগের মুল্লুক বললে ভুল হবে না। এত দাম কীভাবে হয় আমার বোধগম্য হচ্ছে না। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি বড় ইলিশ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছরে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৭২ টন।

জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা ইউনুস মিয়া বলেন, ‘ঈদের পর এখনো মাছ বাজারে সাপ্লাই স্বাভাবিক হয়নি। এ কারণে দাম কিছুটা বেশি।’ একই কথা বলেন মগবাজারের মাছ বিক্রেতা রহিম আলী। তিনি বলেন, সব মাছেরই দাম কিছুটা বেশি। আমরা বেশি দামে মাছ কিনি। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বেচতে হয়। ঈদের আগেও দেশি চাষের রুই বিক্রি করছি ২৫০ টাকা করে। এখন সেই রুই বেচতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। আর বিদেশি রুই ঈদের আগে কেজি ২২০ টাকা হলেও এখন ২৫০ টাকা। এ ছাড়া অন্য মাছেরও একই অবস্থা।

মগবাজারে কথা হয় আশরাফ অপু নামের ক্রেতার সঙ্গে। মাছের দামদর করার সময় বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখে তো মনে হয় মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। কোনো মাছই কিনতে পারছি না। বলা যায় সব মাছেরই দাম বেড়েছে। ভেবেছিলাম ঈদের পর দাম কিছুটা কমবে কিন্তু তা না হয়ে বরং বেড়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close