নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২২

প্রধানমন্ত্রীকে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে ভালো করছে বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শিজিন চেন। তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সময়টা সাধারণত সংকটপূর্ণ হলেও বাংলাদেশ ভালো করছে বলে মন্তব্য করেন শিজিন চেন। গতকাল সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকা সফরে আসা এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট। বৈঠকে নানা প্রসঙ্গে আলাপ করেন তারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টকে বলেন, এই উত্তরণকাল মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। কানেকটিভিটির উন্নয়নে বাংলাদেশের দরজা উন্মুক্ত। আলোচনায় দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা এবং ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এতে তাদের জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে।

করোনা মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশ ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। কৃষি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, এ খাতে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে। এডিবি সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং গ্রাম ও নগর উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রসঙ্গে শিজিন চেন বলেন, এ অঞ্চলগুলো অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা পূরণ করবে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও জ্বালানির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এডিবির সহায়তা কামনা করেন। এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং এডিবি বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দেশবাসী দুই বছর পর এবার অবাধে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মহামারির সময়ে এডিবির সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে বলে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের অনুমানের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার আরো বেশি খাদ্য উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আইসিটি খাতেরও উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দরজা খুলে দিয়েছে। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর যে সব রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেগুলো আবার চালু করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নে আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য এডিবির শীর্ষ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনে বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রত্যাশা করেন।

এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ অন্যতম সেরা উদাহরণ স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ কৃষি খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

শিজিন চেন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে যে সব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে, তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা পূরণ করবে। তিনি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এডিবির আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, এডিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (সাউথ এশিয়ান ডিপার্টমেন্ট) মনমোহন পরকাশ এবং বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাডিমন গিনটিং।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close