মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৯ মে, ২০২২

স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা দন্ত চিকিৎসকের

মানিকগঞ্জের একটি গ্রামে তিন নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একজন স্থানীয় এক পল্লী দন্ত চিকিৎসকের স্ত্রী। বাকি দুজন তাদের মেয়ে। পুলিশ ওই পল্লী দন্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার সকালে ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গুরপাড়া গ্রামে। এই গ্রামের একটি টিনের এই ঘরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।

পুলিশ বলছে, গতকাল রবিবার ভোরে প্রতিবেশী তার চাচাতো ভাই তাদের ঘরের ভেতর থেকে গোঙানির শব্দ শুনেছিলেন। দিনের আলো আরো পরিষ্কার হলে ঘরের বাইরে থেকে প্রথমে তারা ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া নেই। তারপর দেখতে পেলেন ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকলবদ্ধ। শিকল খুলে ঘরে ঢুকে তারা দেখতে পান মা ও দুই মেয়ের গলাকাটা মরদেহ।

ঘিওর থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রেপ্তারের পর ‘অকপটে সবার সামনে স্বীকার করেছে যে রাত সাড়ে ৩টার পর থেকে সে প্রথমে তার স্ত্রী, তারপর ছোট মেয়ে এবং তারপর বড় মেয়েকে হত্যা করেছে। কীভাবে হত্যা করেছে তার বিস্তারিত জানিয়েছে সে। প্রথমে তাদের মাথায় আঘাত করে দুর্বল করে ফেলা হয়, তারপর মুখে বালিশ চাপা দেওয়া হয় এবং একদম শেষে গলা কাটা হয়। ঠাণ্ডা মাথায় এই কথা বলে গেছে গ্রেপ্তার রুবেল।’

পুলিশ বলছে, তাদের প্রেমের বিয়ে ছিল। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকত অভিযুক্ত ব্যক্তি। ষোলো বছর বয়সি বড় মেয়েটি স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। বারো বছর বয়সি ছোট মেয়েটি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘গ্রেপ্তার দন্ত চিকিৎসক বড় ধরনের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সেটা নিয়ে বেশ হতাশার মধ্যে ছিল। আমাদের মনে হয়েছে সে এটা নিয়ে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তার কথা হচ্ছে আমি ঋণগ্রস্ত, আমার স্ত্রী-মেয়ে তারা এই বোঝা বইবে কেন? আমি চাই না তাদের কেউ প্রেশার দিক। এজন্য আমি তাদের পৃথিবী থেকে বিদায় দিয়ে আমি নিজেও যেতাম। কিন্তু তাকে পাওয়া গেছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে।’

বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আওয়াল খান জানিয়েছেন, রাস্তার পাশে শুয়ে ছিল সে। তার গ্রামের একজন তাকে এভাবে দেখে অন্যদের খবর দেয়। তারা তাকে ধরে পুলিশে দেয়। সে সময় তার একটু মতিভ্রম ছিল বলে জানিয়েছে লোকজন। সে রাস্তার মানুষজনকে বলেছে আমাকে আরিচার গাড়িতে তুলে দিতে। তিনি জানিয়েছেন, এ রকম ঘটনা তিনি কোনোদিন দেখেননি। গ্রামের মানুষজন এ ঘটনায় স্তম্ভিত।

আহমেদ জানিয়েছেন, এ ঘটনায় বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডের মামলা করেছেন অভিযুক্তের শ্বশুর। অভিযুক্তকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close