জিয়াউদ্দিন রাজু
শ্রমিক লীগে কোন্দল পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার!
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ জানুয়ারি শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম খসরু সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নানসহ কেন্দ্রীয় কমিটির চারজনকে বহিষ্কার করেন। এর আগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম সাধারণ সম্পাদক আজম খসরুকে বহিষ্কার করেন। তবে সভাপতি যে সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করেছেন, এর কোনো প্রমাণ নেই। কোনো চিঠিও নেই।
আর এই বহিষ্কারের বিষয়টি আজম খসরু নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি এসবের জন্য সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে দায়ী করেন।
সংগঠনের একটি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে আগে থেকেই রয়েছে কোন্দল, যা আগের সভাপতির সঙ্গেও সাধারণ সম্পাদকের ছিল। কেউ কারো সভা-সমাবেশে যান না। একে অন্যের বিরোধিতা করেন। যার কারণে এখন একে অন্যকে বহিষ্কার করেছেন।
সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অভ্যন্তরীণ এসব কোন্দল গড়িয়েছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড পর্যন্ত। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক কেউ কাউকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে পারেন না। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
সংগঠনের সভাপতিকে সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার করতে পারেন কি না? জানতে চাইলে আজম খসরু বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান আমাকে সংগঠন থেকে অপসারণ করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সম্মেলনে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। প্রথমে তিনি আমাকে অপসারণ করতে পারেন কি না তাকে প্রশ্ন করুন। তিনি শ্রমিক লীগের কোনো কার্যক্রমে থাকেন না। তিনি ‘ভাইলীগ’ করেন। শ্রমিক লীগের সভাপতি মারা যাওয়ার পর নুর কুতুব আলম মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়, কিন্তু তারপর থেকে তিনি সব নিয়ম লঙ্ঘন করে ‘ভাইলীগ’ করায় ব্যস্ত। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপের অপরাধে তাকেসহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) খান সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (৩) বি এম জাফর ও দপ্তর সম্পাদক ফজলুল হককে জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক কোনো কাজে আমাদের সহায়তা করেননি। গত ২২ জানুয়ারি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে আলাপণ্ডআলোচনা করেছি। তবে সেখানে তাকে বহিষ্কার বা অপসারণের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমন কোনো লিখিত চিঠি কেউ দেখাতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর করা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এভাবে কি কেউ বহিষ্কার করতে পারে? চিলে কান নিয়েছে শুনে তিনি ফেসবুকে আমাকেসহ চারজনকে বহিষ্কার করেছেন বলে দেখেছি। এটা দুঃখজনক।’
"