সংসদ প্রতিবেদক
সংসদে ইসি গঠনের বিল, বিএনপির বিরোধিতা
বিএনপির তুমুল বিরোধিতার মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বিলে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতাও দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপনের প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বিলটিকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ও ‘যাহা লাউ তাহা-ই কদু’ বলে মন্তব্য করেন।
জবাবে সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে ও জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই ওই বিলটি আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিএনপির প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায় এবং মন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এর আগে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং ওই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং ওই বিষয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।’
খসড়া আইনে সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলটি সংসদে উত্থাপনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা মো. হারুনুর রশীদ বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি জনগণের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলোর এবং সুশীল সমাজের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য একটি আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু যে বিলটি উত্থাপন করতে চাইছেন, সে বিল সম্পর্কে এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলা হয়েছে- ‘যাহা লাউ তাহা-ই কদু’।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্যের জবাব দিতে উঠে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিএনপি নিজেরা নিজেরা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য যত রকম কারসাজি- বিচারপতি আজিজ সাহেবকে দিয়ে কমিশন গঠন, এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি, একজন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য বিচারকদের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করেছিলেন। এটা উনারা কার সঙ্গে আলোচনা করে করেছিলেন? কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য উনারা নিরবচ্ছিন্ন ইলেকশন করতে চেয়েছিলেন। মানে কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য।
"