reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি, ২০২২

কিনোয়ায় সম্ভাবনার হাতছানি

নভোচারীদের খাদ্য বা সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত ‘কিনোয়া’র চাষ শুরু হয়েছে দেশেও। ঔষধি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই দানাশস্যে আছে উচ্চমাত্রার হজমযোগ্য প্রোটিন। পাশাপাশি আছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। পুষ্টিহীনতা রোধে তৈরি করেছে নতুন সম্ভাবনা। ধান বা সবজির চেয়ে ১০ গুণ বেশি দাম পাওয়া গেলেও কৃষকরা চিন্তিত এর বাজার ব্যবস্থা নিয়ে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, কিনোয়া আবাদে কৃষকের ভাগ্য পাল্টে যাবে। লিখেছেন আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) ও মুজিবুর রহমান কয়রা (খুলনা)।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সমতলভূমির কৃষিতে বৈচিত্র্য এনেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। সৃষ্টিশীল মনোভাব নিয়ে কৃষকরাও এগিয়ে চলছেন। এখানে চা, কফি, ভোজ্যতেল পেরিলা, সুপার সিড চিয়ার পর এখন চাষ হচ্ছে কিনোয়া। এতে গ্রাহকের রুচির পরিবর্তনের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকও।

কৃষি অফিস জানায়, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস ৫ বছর গবেষণা করে কিনোয়া-১জাত উদ্ভাবন করে মাঠে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নে এক বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে কিনোয়া। মাগুড়া মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া ১২ শতাংশ, পাশের গ্রামের বিহারী ২০ শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করেছেন। তারা জানান, কিনোয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। তবে কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়ের প্রেরণায় তারা এর চাষ শুরু করেন। তিনি বীজ সহায়তাসহ চাষ শিখিয়ে দিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, কিনোয়া পুষ্টিকর খাদ্য। এটা ভাত, রুটির বিকল্প হিসেবে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, চীনে এমনকি ভারতেও খাওয়া হয়।

এর বাজার জাতকরণ সম্পকে জানতে চাইলে তুষার জানান, বিভিন্ন সুপার শপসহ মার্কেটিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এখন প্রতি কেজি শস্যদানা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে।

উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, গতানুগতিক কৃষি ব্যবস্থার পরিবর্তন এনে ভিনদেশি ফসল চাষে কৃষককে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে।

কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের কৃষানি টুম্পা রাণী সরদার জানান, কিনোয়া সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তাকে কৃষি গবেষণা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিনোয়া লাভজনক ফসল। তাদের পরামর্শে জমিতে কিনোয়া চাষ শুরু করেন। তারা বীজ ও সার দিয়ে চাষ পদ্ধতি শিখিয়েছেন। তবে কিনোয়া চাষে কোনো রাসায়নিক সারের ব্যবহার হয়নি। শুধু জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুস্তফা কামাল শাহাদাৎ বলেন, কিনোয়া একটি লবণ ও খরা সহনশীল। এ জন্য এ ফসল চাষ করলে কৃষক লাভবান হবেন।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ জানান, কিনোয়া হাই প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসল হিসেবে সম্ভাবনায় হয়ে উঠতে পারে কিনোয়া। তাই কয়রায় প্রথম শুরু হয়েছে এর চাষ। আগামীতে দেশের অন্য এলাকাতেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে কিনোয়া।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close