যশোর প্রতিনিধি
চাঁদা না দেওয়ায় ইউপি সদস্য খুন
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৫
যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সদস্য উত্তম সরকারকে কথিত ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট’ পার্টির সদস্যরা খুন করেছে বলে পুলিশ তথ্য প্রমাণ পেয়েছে। চাঁদা না পেয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দুই দিন অভিযান চালিয়ে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে উত্তম হত্যার রহস্য ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে তথ্য দেয় পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন খুলনার ডুমুরিয়া থানার রুদাঘরা গ্রামের ইসাহাক গোলদারের ছেলে ইকরামুল গোলদার, একই উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের মৃত বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ, চুকনগর এলাকার ভাড়াটিয়া সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মৃত শিবপদ মন্ডলের ছেলে প্রশান্ত মন্ডল, যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী গ্রামের মৃত নিতাই বিশ্বাসের ছেলে প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট ও মনিরামপুুরের সুজাতপুর গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব বিশ্বাস।
তাদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, একটি এয়ারগান, তিন রাউন্ড গুলি, দুটি গুলির খোসা, ছয় রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, একটি লোহার রড, একটি ককটেল, ১০ গ্রাম বোমা তৈরির পাউডার (গান পাউডার), ৫০ গ্রাম বোমা তৈরির তারকাঁটা, উত্তম মেম্বার হত্যার মিশনে আসামিদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোন, দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
যশোরের ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, আসামিরা সংঘবদ্ধ কথিত ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট’ পার্টির সক্রিয় সদস্য। তারা দলীয় ছদ্মনাম ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় অবৈধ অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য ইত্যাদি ব্যবহার করে হত্যা, চাঁদাবাজি করে চলেছে। এর আগে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় তারা সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দল গঠন করে যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুরসহ আশপাশের জেলায় মাছের ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, গত ১০ জানুয়ারি অভয়নগরের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য উত্তম সরকারের কাছে চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন অভয়নগর থানায় মামলা হলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, হত্যার পরে জড়িতরা বিভিন্ন জনের কাছে চাঁদা চাওয়ার সময় উত্তম সরকারকে খুন করার রেফারেন্স টেনে মোবাইল ফোনে ভয়ভীতি দেখায়। ডিবি পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ও এসআই মফিজুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম ১৫ থেকে ১৬ জানুয়ারি ভোর পর্যন্ত খুলনার ডুমুরিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা, যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ইকরামুল গোলদার, প্রজিৎ বিশ্বাস, প্রল্লব বিশ্বাস, প্রশান্ত মন্ডল ও বিজন কুমার মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে বিজন ও প্রশান্ত সরকারের আহ্বানে এর আগে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তাদের কাছে থাকা হত্যার মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র গুলি উদ্ধার বিষয়ে এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে অভয়নগর ও মনিরামপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন। এর আগেও আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে।
"