নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২২

রাত পোহালেই ভোট নারায়ণগঞ্জ সিটিতে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আর বাকি মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আগামীকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। এবার তৃতীয় দফায় নির্বাচনের মুখোমুখি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছেন, এই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। কারণ ভোটগ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিনি প্রিসাইডিং অফিসারদের অনুরোধ করেছেন, মাস্ক ছাড়া কোনো ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দিতে এবং এটা নিশ্চিত করতে যে, সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন।

এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত বছরের ৩০ নভেম্বর। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী এ বি এম সিরাজুল মামুন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুরল ইসলাম বাবু। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৩২ জন।

প্রায় ২০ লাখ মানুষের এ সিটিতে ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ আর পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৪ জন। নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাচন কমিশনার ইসির উপসচিব মো. নুরুজ্জামান তালুকদার। তার সঙ্গে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান, সহিদ আবদুস সালাম, মোহাম্মদ নুরুল আলম, মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, মো. রশিদ মিয়া, সাইয়েদ মো. আনোয়ার খালেদ, মো. ওমর ফারুক ও মো. সুমন মিয়া আছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে।

রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও প্রতি কেন্দ্রে একজন করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা; ১২১৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৪৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা আছেন। সব মিলিয়ে ভোটের দায়িত্বে আছেন প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা।

নির্বাচনী এলাকায় ভোটের পর দিন পর্যন্ত পুলিশের চার হাজার, র‌্যাবের ৬০০, বিজিবির ২২ প্লাটুন, কোস্টগার্ডের তিন প্লাটুন এবং ব্যাটালিয়ন আনসার, আনসার-ভিডিপি ও শিল্প পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে গত সোমবার নেমেছে বিজিবি; তাদের ১০ প্লাটুন রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জে। এ ছাড়া শহর এলাকায় ৭ ও বন্দর এলাকায় ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ডে তিনটি করে পুলিশের মোট ৮১টি টিম টহলে রয়েছে। প্রতিটি দলে আছেন ১২ জন করে।

প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৪ জন। এরমধ্যে অস্ত্রসহ ৭ জন পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার তিনজন আর আনসার-ভিডিপির ১৪ জন। শঙ্কা রয়েছে এমন ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ওয়ার্ডগুলোতে নেমেছেন ২৭ নির্বাহী হাকিম ও ৬ বিচারিক হাকিম। ভোটের দিন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের নেতৃত্বে ৪৪ জন নির্বাহী হাকিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া ১৪ জন বিচারিক হাকিমও ভোটের দিন দায়িত্ব পালন করছেন।

ভোট পর্যবেক্ষণে ৯ সংস্থা :

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ৯টি সংস্থার ৪২ পর্যবেক্ষককে অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংস্থাগুলো হলো জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিক ফাউন্ডেশন, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, রিহাফ ফাউন্ডেশন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা- মওসুস।

২০১১ সালের ৫ মে সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল পৌরসভা বিলুপ্ত করে আত্মপ্রকাশ ঘটে সিটি করপোরেশন হিসেবে। প্রথম ভোট হয় ওই বছরের ৩০ অক্টোবর। ইতিহাসে প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী।

এরপর ২০১৬ সালেও প্রথম আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পান আইভী। সেবার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত সাখাওয়াত হোসেনকে ৭৯ হাজার ভোটে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয়বার মেয়র তিনি। ভোটাররা দুবারের মেয়রকে আবার চান নাকি নতুন কোনো নগরপিতা বেছে নেবেন তাই এখন দেখার অপেক্ষা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close