নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ জানুয়ারি, ২০২২

মন্তব্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

ওমিক্রন ছড়ালে পরিস্থিতি নাজুক হবে

দেশে আরো ৯ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জায় (জিআইএসএআইডি) এই তথ্য আপলোড করা হয়েছে। নতুন এই ব্যক্তিদের তথ্য দিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওমিক্রন ব্যাপকহারে ছড়ালে পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। তারা সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারির মধ্যে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। দেশে গত ৯ ডিসেম্বর প্রথম দুজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়। ফলে ৯ জনসহ এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৩০ জনে। এদের নারী ২০ এবং পুরুষ ১০ জন।

গত নভেম্বরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া ওমিক্রন ধরনটি এরই মধ্যে বিশ্বের শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে এর আগে প্রাধান্য বিস্তার করা ডেল্টা ধরনের চেয়ে ওমিক্রন দ্রুত ছড়ালেও গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম বলে প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় ওমিক্রনের ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন হয়েছে। এখনো সারা দেশে ছড়ায়নি। এখনই যদি সঠিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়া যায় তাহলে পুরো দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়তে সময় নেবে না। আর ওমিক্রন ছড়িয়ে গেলে সেই বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে রোগী বাড়ছে, বাড়ছে শনাক্তের হার। সংক্রমণ ও শনাক্তের হার বাড়ছে। তবে এখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া গেলে ভালো হতো।

সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে রাখা গেলে তাকে সহনশীল বলা যায় উল্লেখ করে আলমগীর বলেন, বর্তমানে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছি বলেই জাতীয় কমিটিসহ সবাই যে পরামর্শ দিচ্ছে, সরকার নিশ্চয়ই সে অনুযায়ী কাজ করবে। তবে ওমিক্রন ঠেকানো যাবে না, এর কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঠেকানো খুব কঠিন। ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি। সেইসঙ্গে করোনায় লক্ষণ উপসর্গ বিহীনও থাকেন অনেকে যা কিনা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে।

ওমিক্রন দেশজুড়ে ছড়িয়ে গেলে সেখান থেকে আবার ফেরত আসা কঠিন হবে জানিয়ে ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, গত দুই মাস ধরে সব শপিংমল খোলা, বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে, সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে, ইনডোরে কনসার্ট হচ্ছে এবং এসবের কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এই ভাইরাসটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে এবং বিশেষভাবে পরিবর্তিত ভাইরাস যেকোনো সময়ে বিপজ্জনক হতে পারে।’

স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে ডা. আলমগীর বলেন, রাষ্ট্র হয়তো শাস্তির ব্যবস্থা করবে, সরকারের সব অঙ্গ মিলে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। কিন্তু শাস্তি দিয়ে আর কতজনকে মানানো যাবে? ব্যক্তিগত সচেতনতাই এখানে সবচেয়ে জরুরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close