বাসস

  ২৩ নভেম্বর, ২০২১

মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী

বাড়াতে হবে কাজের গতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রাণঘাতী মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পূর্ববর্তী অবস্থায় নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু উন্নয়ন নয়, সব ধরনের কাজের গতি বাড়াতে হবে; যাতে আমাদের প্রবৃদ্ধির হারসহ সবকিছু কোভিডের আগে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন। তিনি গণভবন থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘যেহেতু কোভিড সংক্রমণের দুবছর হয়ে গেছে। সেজন্য আমাদের একটা প্রোটোকলও ডেভেলপ হয়ে গেছে। সুতরাং, সবাইকে আরেকটু জোরেশোরে কাজ করে ডেভেলপমেন্ট ফেজটা আগের মতো নিয়ে যেতে হবে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় দেওয়া বিধিনিষেধ এখনো কিছু কিছু রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বঙ্গভবনে এবার ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান হচ্ছে না। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রাম হবে, কারণ সেখানে অবাধ মেলামেশা হবে না। অবাধ মেলামেশা টাইপের বিষয়গুলোকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে ৩২ জেলার সঙ্গে মিটিং করে ফেলেছি। তাদের বলেছি, কমফোর্ট ও রিল্যাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবাইকে মনোযোগী থাকতে হবে এবং সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

এরই মধ্যে ৯ কোটি লোককে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টিকা দেওয়া হবে।’

এদিকে মন্ত্রিসভা গতকাল একটি খসড়া বিল অনুমোদন করেছে, যাতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কোনো অজুহাতে তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর আর তাদের পদে থাকতে পারবেন না।

এ বিষয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গত দুটি ক্যাবিনেট মিটিংয়ের আগে স্থানীয় সরকার থেকে একটা আইন নিয়ে আসা হয়েছিল। সেটা ছিল পৌরসভা আইন। আগের আইন অনুযায়ী বিধান ছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী পরিষদ না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভার মেয়র কন্টিনিউ করবেন। তাই দেখা গেছে, মামলা- মোকদ্দমার কারণে পৌরসভায় একেকজন ১৪-১৫ বছর চেয়ারম্যান থাকতেন। জেলা পরিষদেও এই বিধান ছিল।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, ‘এটাও স্থানীয় সরকার বিভাগ নিয়ে আসছে, এটাও ওই পৌরসভা অ্যাক্টের মতো মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে যত দিন পরিষদ গঠিত না হবে সরকার প্রশাসক দিয়ে রাখতে পারবে।’

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সদস্যদের ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র ও সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রতিনিধিরা উপজেলা পরিষদের সদস্য হবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা অবজার্বিং মেম্বার হবেন। বোর্ডটা রিভাইস করার সুপারিশ করা হয়েছে।’

কোনো ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সনদ ছাড়া কোনো চলচ্চিত্র প্রদর্শন করলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এত দিন আমাদের সিনেমাগুলো অনুমোদন করা হতো সেন্সরশিপ অব ফিল্ম অ্যাক্ট-১৯৬৩ এবং ১৯৭২ সালে একটি অ্যামেনমেন্ড করা ছিল। পরে ২০০৬ সালে আইনটিকে সংশোধন করা হয়েছিল। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এটাকে মোডিফিকেশন করা হয়েছে যে, আইনটি সেন্সরশিপ আইন না হয়ে সার্টিফিকেশন আইন হওয়া উচিত। তার একটা পার্ট থাকবে সেন্সর। শুধু সেন্সর থাকলে এখানে অন্য রকম অসুবিধা হয়।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এখন সার্টিফিকেশন আইন। সার্টিফিকেশন আইনে গেলে সেখানে সেন্সর একটা পার্ট থাকবে। সেজন্য তারা একটা অ্যামেনমেন্ড নিয়ে এসেছিলেন। এখানে খুব বেশি বা ম্যাসিভ কোনো চেঞ্জ হয়নি। সেন্সরশিপ যে আইনটি ছিল, তার সঙ্গে কিছু কিছু যোগ করে এ আইনটা নিয়ে আসা হয়েছে।

শাস্তি প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি সার্টিফিকেশনবিহীন কোনো চলচ্চিত্র বা প্রতীকবিহীন কোনো সার্টিফিকেশন পাওয়া চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেন তাহলে সে অপরাধে তিনি অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর কোনো ব্যক্তি যদি কোনো চলচ্চিত্রের সার্টিফিকেশন পাওয়ার পর কোনো টেম্পারিং করেন, অনেক সময় যে সিনগুলো সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত না বা সেন্সর না সেগুলো যোগ করেন, তাহলে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০২২ সালের ৩০ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু করা হবে। পদ্মা সেতুর কাজ ৮৭ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি ৩০ জুন (২০২২) বা তার আগে ও পরে ইনশাআল্লাহ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close