রিফাত আনজুম

  ২১ নভেম্বর, ২০২১

ব্যর্থতায় সিরিজ হার

পরাজয়ের শিকলে বন্দি বাংলাদেশ একটি জয়ের জন্য কত চেষ্টাই না করছে। সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে টানা পাঁচ পরাজয় দিয়ে শুরু। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আশা জাগিয়ে পারেনি বাংলাদেশ। গতকাল আশা জাগানিয়া কোনো সুযোগও পায়নি বাংলাদেশ। এতটাই বিবর্ণ ব্যাটিং করেছে যে, স্কোরবোর্ডে লড়াই করার রানও তুলতে পারেনি তারা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করেছে মাহমুদউল্লাহর দল। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকটে ১০৮ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে ফখর জামানের ফিফটিতে ১১ বল আর ৮ উইকেট হাতে রেখে সহজ জয় পায় পাকিস্তান।

১০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটাও ভালো হয়নি। দলীয় ১২ রানে অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে স্ট্যাম্প ভাঙে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ফখর জামান ও রিজওয়ান প্রাথমকি চাপটা বেশ ভালোভাবেই সামাল দেন। দলকে সহজ জয়ের রাস্তা তৈরি করে দেন এ দুই ব্যাটার।

ইনিংসের ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে মিড উইকেটে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সাইফ হাসান। বাংলাদেশের ক্যাচিংয়ের দুর্বলতার চিত্র আবারও ফুটে ওঠে। এই সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান এই বাঁহাতি ব্যাটার। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি তুলে নেন তিনি। রিজওয়ান-ফখরের ব্যাটে ততক্ষণে জয়ের ভিত পেয়ে যায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের আরও একটি দৃশ্যপট দেখা যায় ইনিংসের ১৬তম ওভারে। এবারও বোলার সেই বিপ্লব। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সহজ একটি ক্যাচ দেন রিজওয়ান। সে ক্যাচটি ফেলে দেন তাসকিন।

তবে বিপ্লব তার কাক্সিক্ষত সাফল্য পান এই ক্যাচ মিসের এক বল পরই। মারতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দেন ৩৯ রান করা রিজওয়ান। এবার আর ভুল করেননি সাইফ হাসান। ভাঙে ৮৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ফখর জামান ও হায়দার আলী জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। ১৮.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান করে জয় তুলে নেয়

পাকিস্তান। ফখর ৫১ বলে ৫৭ ও হায়দার ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বরাবরের মতোই ওপেনিং জুটি ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া সাইফ হাসান আজও ব্যর্থ। প্রথম ওভারেই শাহীন আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। প্রথম আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলেও রিভিউ নেন আফ্রিদি। এতে আর রক্ষা পাননি সাইফ। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ফিরে যান পরের ওভারে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন ২ রান করা নাঈম। ৫ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুর চাপটা রক্ষা করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর হয় ২ উইকেটে ৩৬ রান।

নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন তৃতীয় উইকেট জুটিতে সেই চাপটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। ৪৬ রানের জুটি গড়ে সে চাপ কিছুটা হলেও দূর করেন শান্ত ও আফিফ। সাদাব খানের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনের সহজ ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২০ রান করা আফিফ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ধীরগতির ইনিংস খেলে ১৫ বলে ১২ রান করে হারিস রউফের বলে খোঁচা মেরে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন।

এক প্রান্ত আগলে রেখে ভালোই খেলছিলেন শান্ত। তবে ৩৪ বলে ৪০ রান করে সাদাব খানের দারুণ এক ফিরতি ক্যাচে আউট হন শান্ত। ৮২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অবারও চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। সে চাপটা আরও বাড়িয়ে দেন মেহেদী হাসান। ৩ রান করা মেহেদী নাওয়াজের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন। নুরুল হাসান ১১ রান করে আউট হলে ১০২ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৮ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। পাকিস্তানের সাদাব ও আফ্রিদি ২টি এবং ইমাদ ওয়াসিম, হারিস রউফ ও নাওয়াজ ১টি করে উইকেট নেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close