স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোনো বিশেষ অঞ্চলকে গুরুত্ব না দিয়ে সারা দেশেই সমভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। উন্নয়ন সব জায়গাতেই করতে হবে। কোনো অঞ্চল বাদ দিয়ে উন্নয়ন নয়। মন্ত্রী হলে নিজ এলাকায় উন্নয়ন বেশি হবে আর অন্য এলাকায় কম হবে- এই নীতি আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে না। মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্যানিটেশন ও পানিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রী গতকাল শনিবার পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন বোদা-ভাউলাগঞ্জ সড়কের জিসি সড়কের ১৪৭৭৫ মিটার চেইনেজে করতোয়া নদীর ওপর আউলিয়া ঘাটে প্রস্তাবিত ব্রিজের স্থান পরিদর্শন শেষে মাড়েয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের সুফল যেমন সব মানুষ পাবে। তেমনি সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়নের কর্মকান্ড শামিল হতে হবে। এ উন্নয়নের ফল ধনী-গরিব, কৃষক-শ্রমিক, রিকশাচালক-কুলি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ

উন্নয়নের সুফল সমানভাবে ভোগ করবে। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান-বৌদ্ধ দেশটা সবার। তাই সবার সহাবস্থান নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

করতোয়া নদীর ওপর আউলিয়া ঘাটে খুব শিগগিরই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ব্রিজ নির্মিত হলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে বিশাল পরিবর্তন আসবে। মানুষের বহু দিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব হবে।

দেশের সব খাতে সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্য তুলে ধরে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম আরো বলেন, শেখ হাসিনার পাশে দেশের জনগণ আছে বলেই বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর মাধ্যমে দেশে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপির পাশে এখন আর জনগণ নেই। জনগণের ভয়ে গুন্ডা-পান্ডা নিয়েও তারা মাঠে নামতে পারছে না। ক্ষমতা থাকা অবস্থায় নিজেদের আখের গোছানো ছাড়া দেশ ও মানুষের জন্য কিছুই করেনি। সে কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন তারা নতুন ফন্দি করছে। ধর্মকে পুঁজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বাঙালি জাতি আর ভিক্ষুক-মিসকিনের জাতি হিসেবে পরিচিতি পায় না। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। উন্নয়নের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাজহারুল হক প্রধান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুুর রশীদ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে পঞ্চগড় জেলার সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভাগীয় উন্নয়ন পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

দেশের জিডিপি বৃদ্ধি, ফরেন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স ও মাথাপিছু আয়সহ অর্থনৈতিক সূচকে অগ্রগতি চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। এটি কাল্পনিক কোনো কথা ছিল না। তার কন্যা শেখ হাসিনা তা প্রমাণ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক প্রচেষ্টার ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় জেলা সফর করার জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভাগীয় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রীকে বিজিবির পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।

"