নিজস্ব প্রতিবেদক
লিটারে ৭ টাকা বাড়ল সয়াবিনের দাম
ভোজ্য তেলের দাম আরেক দফা বাড়ল লিটারপ্রতি ৭ টাকা। ফলে এখন থেকে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ এবং বোতলজাত তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকায় বিক্রি হবে। গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর এ ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ভোজ্য তেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উৎপাদক সমিতি। ফলে দেড় মাসের ব্যবধানে আরেক দফা বাড়াল ভোজ্য তেলের দাম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘বুধবার থেকে নতুন দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।’ তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও অপরিশোধিত পাম তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ দাম নির্ধারণ করেছে ভোজ্য তেল উৎপাদক সমিতি।
নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৫৩ থেকে বাড়িয়ে ১৬০ টাকা, খোলা সয়াবিন ১২৯ থেকে বাড়িয়ে ১৩৬ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ থেকে বাড়িয়ে ৭৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভোজ্য তেলের দাম বাড়াতে মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছিল মিল মালিকদের সমিতি। সে সময় সয়াবিন তেলের দাম না বাড়ালেও পাম তেলের দাম প্রতি লিটার ১১২ থেকে বাড়িয়ে ১৬০ টাকার ঘোষণা এসেছিল। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল আগের নিয়মে প্রতি লিটার ১২৯ এবং প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৫৩, পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৭২৮ টাকায় বিক্রি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে আরেক দফায় বেড়ে যাওয়ার কথা বলে খোলা বাজার ও মুদি দোকানগুলোতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়িয়েই বিক্রি হচ্ছিল সয়াবিন তেল।
চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে খুচরা পর্যায়ে ঢাকার বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৬ থেকে ১৫৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৪২ থেকে ১৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
সমিতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও অপরিশোধিত পাম তেলের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিবেচনায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা ক্রমে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্য তেলের নিম্নরূপ মূল্য নির্ধারণ করল।
এর আগে গত ২৭ মে সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো হয়। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে সয়াবিন তেলে লিটারপ্রতি তিন টাকা ছাড় দেওয়ায় সেবার সব মিলিয়ে দাম বাড়ে ১২ টাকা। দেশের মোট চাহিদার ৯৫ শতাংশ ভোজ্য তেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। ২০২০ সালের পর থেকে ভোজ্য তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির জন্য দেশে কয়েক দফায় সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশে গত এক দশকের মধ্যে ভোজ্য তেলের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২০১২ সালের মাঝামাঝি। ওই বছর বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দেশের সয়াবিনের উৎস ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে দাম বাড়ছেই। তারা গত মাসেই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
"