নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ অক্টোবর, ২০২১

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন আজ। সৌদি আরবের মক্কা নগরে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। দিনটিকে অশেষ পুণ্যময় ও আশীর্বাদধন্য দিন হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আরব জাহান যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহ। বাংলাদেশে দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। দিনটি যথাযথযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপন করা হবে। কেউ কেউ মাসব্যাপী প্রিয় নঈ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, বেড়ে ওঠা, নবুয়ত, হিজরত, রাষ্ট্রগঠন, ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, আন্তর্জাতিক জীবন, সমাজ সংস্কারসহ জন্ম থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিষয় নিয়ে সিরাতুন্নবী ও উসওয়াতুন্নবী শিরোনামে অনুষ্ঠান উদ্যাপন করবেন। এছাড়া কেউ কেউ মাজিউন্নবী আবার কেউ কেউ ৬৩ দিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী শীর্ষক আলোচনা সভাও অব্যাহত রাখে। যা রবিউল আউয়াল মাসেই উদযাপন করা হয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই ‘আল-আমিন’ নামে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তার এই খ্যাতি ছিল ন্যায়নিষ্ঠা, সততা ও সত্যবাদিতার ফল। তার মধ্যে সম্মিলন ঘটেছিল সমুদয় মানবীয় সদগুণের : করুণা, ক্ষমাশীলতা, বিনয়, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, শান্তিবাদিতা। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি কর্মময়তাও ছিল তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে বিশ্বমানবতার মুক্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠা ছিল তার ব্রত। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলির মানুষ হিসেবে তিনি সব কালে, সব দেশেই স্বীকৃত।

মহানবী (সা.) বিশ্বকে সভ্যতা ও সংস্কৃতির শিক্ষা দিয়েছেন। অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতিসহ মানবজীবন পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে যে নীতিমালা তিনি দিয়েছেন তা সর্বকালের মানুষের জন্য অনন্য ভাস্বর ও সবচেয়ে বেশি কার্যকর। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে নবী মোস্তফা (সা.) উপস্থাপিত ইসলামি বিধানের যত মিল রয়েছে তা অন্য কোনো মতাদর্শের সঙ্গে নেই। তিনি সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নারীর মর্যাদা ও অধিকার, শ্রমের মর্যাদা, মনিবের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট ভাষায় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বিদায় হজের ভাষণ মানবজাতির জন্য চিরকালীন দিশারি হয়ে থাকবে।

এদিকে, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সারা দেশে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফা)। গতকাল মঙ্গলবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ১৫ দিনব্যাপী বাদ মাগরিব ও বাদ এশা দেশবরেণ্য বিশিষ্ট আলেমদের ওয়াজ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের যৌথ উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্মের ওপর সেমিনার। স্কুল, কলেজ, আলিয়া, কওমি মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে কেরাত, আজান, হামদ-নাত, উপস্থিত বক্তৃতা, কবিতা আবৃত্তি, রচনা লিখন ও খুতবা লিখন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে পক্ষকালব্যাপী ইসলামি বইমেলার আয়োজন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে কেরাত মাহফিল, হামদ-নাত ও স্বরচিত কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে দেশের প্রখ্যাত কারি ও শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।

কেন্দ্রীয়ভাবে এসব অনুষ্ঠান ছাড়াও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন ও ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close