রাজিবুল ইসলাম

  ১৪ অক্টোবর, ২০২১

বিতর্কিত গোলে স্বপ্নভঙ্গ

বাংলাদেশ ১ : ১ নেপাল

কে জানত এমনটা হবে, কে জানত ফাইনালের স্বপ্নটা এভাবে বিষাদে রূপ নেবে! ১৮ কোটি বাঙালি তো ঠিকই আশায় বুক বেঁধে ছিল। বিতর্কিত এক গোলে জামালদের সেই স্বপ্ন অন্ধকারে হারিয়ে যায় নিমিষেই। কী হতে কী হয়ে গেল মুহূর্তেই। বাংলাদেশের দর্শক-শ্রোতা থেকে শুরু করে খেলোয়াড়, কেউ মেনে নিতে পারছেন এমন পরাজয়। ম্যাচ শেষে তাই প্রতিটি ফুটবলার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হতাশায়। অঝোরে কাঁদতে থাকেন স্বপ্নভঙ্গের কষ্টে।

গতকাল মালদ্বীপ জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ১৬ বছর পর সাফ ফাইনাল খেলার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়। উজবেকিস্তানের রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে মালে স্টেডিয়াম পরিণত হয় বাংলাদেশের ট্র্যাজেডি হিসেবে। গ্যালারিতে বাংলাদেশের সমর্থকরাও নিথর দাঁড়িয়ে রইলেন। প্রেসবক্সে থাকা বাংলাদেশি সাংবাদিকরাও নিশ্চুপ।

ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে লাল কার্ড দেওয়ার পর পুরো দল চরম বিপদে পড়ে। বক্সের বাইরের বল ক্লিয়ার করতে এগিয়ে যান গোলরক্ষক জিকো।

এ সময় তার হাতে বল লাগলে রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখান। ম্যাচের বাকি সময় বাংলাদেশ দশজন নিয়ে খেলে।

জিকো লাল কার্ড দেখায় কোচ অস্কার দ্রুত দুটি পরিবর্তন করেন। বিপলুকে বদলে সিনিয়র গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে নামান। ফরোয়ার্ড সুমন রেজার পরিবর্তে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদকে নামান। রানা নামার পরপরই একটি ফ্লায়িং সেভ করেন। অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক পেনাল্টি শটের সময় সঠিক দিকে ঝাঁপ দিলেও সেভ করতে পারেননি গোল। দশজন নিয়ে আর জেতা হয়নি বাংলাদেশের। ফলে চার ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে নেপাল সাফে ফাইনালে খেলা হলো না বাংলাদেশের। চার পয়েন্ট নিয়েই বিদায় নিলেন জামালরা।

২০০৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশ আর কখনো ফাইনাল খেলতে পারেনি। গতবার নিজেদের মাঠে এই নেপালের কাছে হেরেই গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল।

কোচ অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। ফলও মিলেছে। ম্যাচ শুরুর দশ মিনিট পরই গর্জে উঠল মালে স্টেডিয়াম। বাঁ-প্রান্ত থেকে রাকিব বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। নেপালের ডিফেন্ডার তাকে বাধা দিলে পড়ে যান। উজবেকিস্তানের রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিক থেকে বক্সে জটলার মধ্যে হেড করেন সুমন রেজা। বল জড়িয়ে যায় নেপালের জালে। দুই ম্যাচ পর আবার একাদশে সুযোগ পাওয়া সুমন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন। উত্তর বারিধারার হয়ে সদ্য সমাপ্ত লিগে সুমন ছিলেন দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ সুমনের গোলেই ড্রেসিংরুমে ফেরে।

দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল ম্যাচে ফেরার সব চেষ্টাই করেছে। প্রথমার্ধে নায়ক সুমন, দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের নায়ক ও খলনায়ক গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। নেপালের ফরোয়ার্ডদের একের পর এক আক্রমণ প্রতিহিত করেন। ৫৫ মিনিটে বক্সের মধ্যে নেপালের ফরোয়ার্ড নবযুগ শ্রেষ্ঠার হেড সেভ করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। আরো বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করেন। এত সেভ করার পরও ৭৮ মিনিটে তার ভুলে বাংলাদেশ দশজনের দলে পরিণত হয়। এরপর রেফারির সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। ৮৮ মিনিটে পেনাল্টিতে গোল করে নেপাল সমতা ফেরায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close