সাদমান সময়, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

রোহিঙ্গা পাচারের নিরাপদ রুট

কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ২০২০ সালের শেষের দিকে ভাসানচরে চার দফায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক স্থানান্তর করা হয়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে ৭১ জন রোহিঙ্গা দালালচক্রের মাধ্যমে নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে সাগরপথে ইঞ্জিনচালিত চালিত ট্রলারে মিরসরাই উপকূল এলাকা ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে রাতের আঁধারে পালিয়ে এসেছে।

জানা গেছে, ভাসানচর থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের দূরত্ব আনুমানিক ২০ কিলোমিটার। অর্থনৈতিক অঞ্চলের একাংশ এখনো ঘনজঙ্গল ঝোপঝাড়ে আচ্ছন্ন। অন্যদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে মহাসড়ক কাছে হওয়ায় এই রুটটি দালালদের জন্য নিরাপদ। আর এই রুটটি কাজে লাগিয়ে দালালরা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যেতে সাহায্যে করছে।

গত ১১ জুলাই পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানায়, উন্নত বাসস্থান ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সত্ত্বেও ভাসানচরে তাদের ভালো লাগছিল না। তাদের কারো বাবা-মা, কারো ভাইবোন, কারো ছেলেমেয়ে উখিয়াতে রয়েছে আর তারা ভাসানচরে। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া ভাসানচরে থাকা তাদের জন্য কষ্টকর। তাই তারা কুতুপালংয়ের উদ্দেশ্যে দালালচক্রের মাধ্যমে পালিয়ে আসছে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রথমধাপে ৩১ মে ৩ দালালসহ ১০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ২২ জুন ১৪ জন, তৃতীয় ধাপে ১১ জুলাই ১৮ জন, চতুর্থ ধাপে ২০ জন এবং সর্বশেষ ৯ সেপ্টেম্বর ৯ জন রোহিঙ্গাকে মিরসরাই উপকূল থেকে আটক করেছিল মিরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বলেন, দালালরা বিভিন্ন এলাকার, তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। আটক রোহিঙ্গারা তাদের নাম বলতে পারছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে নোয়াখালী, কক্সবাজার, টেকনাফের দালালদের যোগসাজশে ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসছে। এর পেছনে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে পুলিশ। মিরসরাই থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গারা মূলত কুতুপালং থাকা তাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের কাছে যাওয়ার জন্য পালিয়ে আসে। ভাসানচর থেকে সবচাইতে সহজ রুট মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল। মহাসড়কও কাছে। আমাদের টহল টিম সজাগ থাকায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছে।

মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভাসানচর থেকে সাগরপথে অর্থনৈতিক অঞ্চলের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই স্বল্পপথ ট্রলারে পাড়ি দেওয়া খুবই সহজ। আর এখানকার কিছু অংশ ঘন জঙ্গল। দালালদের মাধ্যমে গোপনে এখানে চলে আসে তারা। আমরা সবসময় টহল দিচ্ছি।

ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এক কর্মকর্তা জানান, আমরা ২৪ ঘণ্টা পুরো এলাকা নজরদারিতে রাখছি যেহেতু ভাসানচর উন্মুক্ত সেক্ষেত্রে আমরা তাদের চলাফেরাতে বাধা দিতে পারি না। কেউ মাছ ধরার নাম করে কেউ বাজার করার নামে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close