নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ আগস্ট, ২০২১

কাল নয়, গণটিকা ১৪ আগস্ট থেকে

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশে গণহারে টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় আগামীকাল থেকে গণটিকা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও হঠাৎ করেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ছয় দিনের পরিবর্তে এখন মাত্র এক দিন করা হবে ক্যাস্পেইন। এরপর ১৪ আগস্ট থেকে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ক্যাম্পেইনের আওতায় আপাতত এক দিন (৭ আগস্ট) ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তারপর সাত দিন বন্ধ থাকার পর আবার ক্যাম্পেইন চালু হবে। তবে চলমান টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ডা. খুরশীদ আলম আরো জানান, আগামীকাল পরীক্ষামূলক দেওয়া হবে আর ১৪ আগস্ট থেকে গণহারে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে।

এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল, সবাইকে টিকার আওতায় আনতে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে আগামী ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন চলবে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে গণটিকা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার পর আবারও শুরু হবে টিকা দেওয়া। মুখ্য সচিব আরো বলেন, সরকার প্রতিদিন ৩২ লাখ টিকা দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে। এরমধ্যে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ টিকা কয়েক দিনের মধ্যে দেশে চলে আসবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, আপাতত বিশৃঙ্খলা এড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন ছাড়া কাউকেই টিকা দেওয়া যাবে না। যারা নিজেরা নিবন্ধন করতে পারবেন না, তাদের নিবন্ধন করতে সহায়তা করবেন স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। এমনকি যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে পারেন, সে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কর্তৃপক্ষকে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ে (মহানগরের বাইরের) টিকার পরিকল্পনার বিষয়ে ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, আমাদের দেওয়া নির্দেশনা অনুসারে সাত দিনব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি ঠিক করা হলেও বাস্তবে টিকা দেওয়া হবে তিন দিন। ওই সাত দিনের মধ্যে শুক্রবার টিকা দেওয়া হবে না, আর বাকি তিন দিন অন্যান্য রোগের নিয়মিত টিকাদান চলবে।

এ গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেশের অন্তত এক কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। দেশের ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত সর্বত্র এ টিকা উৎসব চলবে।

এ কর্মসূচির আওতায় সিটি করপোরেশনের বাইরে প্রথম দফায় প্রতিটি কেন্দ্রে ৬০০ জন করে মোট ১৪ হাজার কেন্দ্রে ৮৪ লাখ এবং সিটি করপোরেশনের নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলাদাভাবে আরো ১৬ লাখ টিকা দেওয়া হবে। এজন্য প্রথম দফায় প্রতিটি ইউনিয়নের তিনটি কেন্দ্র বাছাই করা হয়েছে।

করোনার টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধন করতে হয় ‘সুরক্ষা’ নামক ওয়েব পোর্টালে (www.surokkha.gov.bd)। অ্যাপল বা অ্যান্ড্রয়েড প্লে-স্টোর থেকেও সুরক্ষা মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করেও করা যায় নিবন্ধন।

এজন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাম, ঠিকানা, বয়স, পেশা, শারীরিক পরিস্থিতি, ফোন নাম্বার ইত্যাদি তথ্য। সেখানে প্রথমে নিজের পেশার ধরন, পেশা বাছাই করার পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্ম তারিখ দিতে হবে।

বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগের প্রোগ্রামাররা এই ডেটাবেইজটি তৈরি করেছেন। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় এই ওয়েবসাইটে তথ্য পূরণ করা যায়। ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে নিবন্ধন করতে হলে তাদের বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হয়।

এর আগে ২৭ জুলাই করোনা মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিং শেষে গণটিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকা। এ বৈঠকেই ৭ আগস্ট থেকে দেশের সব ইউনিয়নে টিকা কেন্দ্র স্থাপন করে প্রত্যন্ত এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close