নিজস্ব প্রতিবেদক
বাসায় র্যাবের অভিযান
বিপুল মাদকসহ পরীমনি আটক
আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বুধবার তার বনানীর বাসায় প্রায় ৩ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত ৮টায় তাকে আটক করে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযানে পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদসহ মাদকদ্রব জব্দ করা হয়।
অভিযান চলাকালে এলিট ফোর্সটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, সুনির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় র্যাব অভিযান চালায়। অভিযান শেষে র্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং না করলেও অভিযানে অংশ নেওয়া এক র্যাব কর্মকর্তা জানান, অভিযানে প্রথম দিকে পরীমনি র্যাবকে সহযোগিতা করেননি। তবে পরে তার ঘর তল্লাশি করে ফ্ল্যাটের কেবিনেট থেকে বিদেশি মদ, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইইথ্যালামাইড (এলএসডি) এবং আইস উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তার ড্রয়িং রুমের বক্সে, শোকেস, ডাইনিং রুম, বেডরুমের সাইড টেবিল এবং টয়লেট থেকে বিপুলসংখ্যক মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে অংশ নেওয়া একজন জানান, পরীমনির বাসায় এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে মদ নেই। তার কাছে দেশি-বিদেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের মদ ছিল যা বাংলাদেশে খুব কমই আমদানি হয়।
র্যাবের অভিযান চালানো আগে বিকরল ৪টায় পরীমনি তার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন। লাইভে তিনি বলেন, ‘কে বা কারা আমার বাড়ির গেট ভেঙে আমার বাসায় ঢুকতে চাচ্ছে। তারা কোনো পরিচয় দিচ্ছে না। আমি আগেই বলেছিলাম আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে।’
প্রায় আধাঘণ্টা চলা লাইভে তিনি বলেন, ‘আমি বনানী থানায় ফোন করে বলেছি আমাকে কেউ মেরে ফেলতে এসেছে। আপনা আমাকে বাঁচান।’
লাইভে থাকাকালীন অবস্থায় পরে যখন তিনি গেট খুলে দেন তখন উপস্থিত র্যাব সদস্যদের উদ্দেশে পরীমনি বলেন, ‘আমি ভয় পেয়েছি, তাই গেট খুলিনি। কী করব, আমার হুঁশ নেই।’
এরপর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বনানীর লেক ভিউ ১৯/এ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাড়িতে পরীমনির ভাড়া বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। প্রায় তিন ঘন্টা অভিযান শেষে পরীমনিকে একটি সাদা গাড়িতে করে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অভিযানের বিষয়ে এলিট ফোর্সটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, সুনির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় র্যাব অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পরীমনির বাসার নিচে র্যাব-১ এর একটি গাড়ি ও পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িও ছিল। বাসার আশপাশে পুলিশ সদস্যদের কঠোর অবস্থান ছিল। অভিযান শুরুর ৩০ মিনিট পর তার বাসায় বেশ কয়েকজন র্যাবের নারী সদস্য প্রবেশ করেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পরীমনিকে তার বাসা থেকে বের করে একটি গাড়িতে করে র্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া তার বাসা থেকে জব্দ করা বিদেশি মদসহ অন্যান্য জিনিসপত্র আরেকটি গাড়িতে করে নিয়ে যায় র্যাব।
অভিযান চলাকালে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পরীমনি তার বাসার বারান্দায় এসে নিচে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের বাসায় যাওয়ার জন্য ডাকতে থাকেন।
গত ৯ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি নিজেই। পরে ১৪ জুন সাভার মডেল থানায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
"