প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৯ মে, ২০২১

বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১৫ জনের, নেত্রকোনায় ৮

বজ্রপাতে নেত্রকোনার চার উপজেলায় ৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক কিশোর, নওগাঁর মহাদেবপুরে এক কৃষক, মানিকগঞ্জে কৃষক ও শিক্ষার্থী এবং ফরিদপুরে নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট

নেত্রকোনা : নেত্রকোনার চার উপজেলার বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরীতে তিনজন, কেন্দুয়া দুজন, মদনে দুজন ও পূর্বধলায় একজন মারা যান। এছাড়া ওই সময় খালিয়াজুরীতে পাঁচজন ও মদন উপজেলায় চারজন আহত হয়েছেন। হতাহতরা গতকাল মঙ্গলবার মাঠে কাজ করতে ও খেলতে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়েন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের বৈরাটী গ্রামের মো. বায়েজিদ মিয়া (৪২) সবজিখেতে কাজ করার সময় ও কান্দিউড়া ইউনিয়নের কুন্ডলী গ্রামের মো. ফজলুর রহমান (৫৫) ধানখেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে তাদের শরীর ঝলসে যায়। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের খেলু ফকিরের ছেলে কৃষক অছেক মিয়া (৩২), একই গ্রামের আমির সরকারের ছেলে কৃষক বিপুল মিয়া (২৮) ও বাতুয়াইল গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে মনির (২৮) বজ্রপাতে নিহত হন। তারা বরবরিয়া হাওরে কাজ করছিলেন। এ সময় আহত হন অন্তত পাঁচজন।

এদিকে মদন থানার ওসি ফেরদৌস আলম বলেন, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের মৃত আবদুল কাদিরের ছেলে হাফেজ মোহাম্মদ শরীফ (১৮) ও মৃত একই গ্রামের আবদুল মন্নাফের ছেলে মাওলানা আতাবুর (২১) নামের দুই যুবক নিহত হয়েছেন। তারা ধানকাটা পতিত জমিতে ফুটবল খেলছিলেন। এছাড়া বজ্রপাতে পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের রবিন (১৫) রুমান (১৮) ও তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামের ভিক্ষু মিয়ার স্ত্রী কণা (৪৫) ও চন্দন মিয়ার স্ত্রী সুরমা আক্তার আহত হন।

অপরদিকে পূর্বধলা উপজেলার ধলামুলগাঁ ইউনেয়নের পাগলী গ্রামের ইছহাক ফকিরের ছেলে জুনায়েত বাড়ির সামনের মাঠে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বজ্রপাতে আটজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, বজ্রপাতে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে নগদ ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহতদের পরিবারকে ৩ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ঝড়ে আম কুড়াতে গিয়ে সাহাপাড়া-গৌড়াপাড়া এলাকায় ফারুক আলী (১৫) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুর রকিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফারুক উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের সাহাপাড়া-গৌড়াপাড়ার জিয়ারুল ইসলামের ছেলে।

মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরের সফাপুর ইউনিয়নের বিনোদপুর এলাকার মাঠে বজ্রপাতে আবদুল্লাহেল কাফি (৩৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিনোদপুর গ্রামের জফির উদ্দিনের ছেলে। সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম বাচ্চু বলেন, কাফি নিজের বেগুন খেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন।

মানিকগঞ্জে : বজ্রপাতে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় বরটিয়া রাহাতহাতি গ্রামের মৃত মাইনুদ্দিন শেখের ছেলে আহাম্মদ আলী (৫০) ও সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকার মোহাম্মদ নেন্দু মিয়ার ছেলে আসিফ হোসেন (১৫) নিহত হন। সে স্থানীয় রাকিব আহাম্মেদ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

বিষয়টি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, খেতে ধান কেটে বাড়ি আসার সময় দিনমুজুর আহাম্মদ আলী বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরদিকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ি উড়ানোর সময় বজ্রপাতে মারা যান স্কুলছাত্র আসিফ। তার সঙ্গে থাকা তিন বন্ধু আহত হন।

ফরিদপুর : ফরিদপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাডাঙ্গী মহল্লায় আনোয়ারা বেগম (৪৫) স্বামী ও ছেলের সঙ্গে মাঠ থেকে ধান নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আনোয়ারা বেগম মোল্লাডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক কাবুল শেখের স্ত্রী। তিনি এক মেয়ে ও দুই ছেলের মা। একই ভাবে ফরিদপুর পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী মহল্লার গোপাল মোল্লার ছেলে কৃষক কবির মোল্লা (৪৮) ধান নিয়ে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে নিহত হন। অপরদিকে সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের আদুমাতুব্বর ডাঙ্গীর দুলাল খান নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close