বাসস
দেশের ক্ষতি হয় এমন পরামর্শ গ্রহণ করব না : প্রধানমন্ত্রী
অতীতে বিএনপি সরকারের সময় বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে বাংলাদেশের রেল বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দেশের ক্ষতি হয় এমন কারো কোনো পরামর্শ গ্রহণ করবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় অন্যের পরামর্শেই দেশ চলেছে কিন্তু আমি এটা করব না। কারণ দেশটা আমাদের এবং আমরাই ভালো জানি কিসে দেশ ও জনগণের উন্নতি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে সভাপতিত্বকালে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে এবং শেরেবাংলা নগরের এনইসি কনফারেন্স রুম, পরিকল্পনা কমিশন ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্টরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে। সব সময় খালি পরমুখাপেক্ষী থাকলে হবে না। সেই উৎসাহটা দেবেন আপনারা, সেটাই চাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটা আমাদের আমরা জানি কীভাবে দেশের উন্নতি করতে হবে। তবে পরামর্শ নেব আমরা। সেই পরামর্শটা এমন হবে না যেটা দেশের জন্য ক্ষতিকর।’
প্রধানমন্ত্রী উদাহারণ দেন, ‘দেশের জন্য রেল কল্যাণমুখী হলেও বিএনপি দাতা গোষ্ঠীর পরামর্শে রেল বন্ধ করে দেওয়ার পুরো বন্দোবস্ত করে ফেলেছিল। কর্মচারী ছাঁটাই, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সবকিছুর ব্যবস্থাই হয়েছিল। কিন্তু আমরা সরকারে এসেই এর জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দসহ রেলকে আলাদা মন্ত্রণালয় করে দিলাম।’ তিনি বলেন, ‘রেল এবং পর্যায়ক্রমে পাবলিক বাস যাতে পাবলিক চলাচল করে তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিশ্বব্যাংকের একটা পরামর্শে। কিন্তু আমরা সবই চালু রেখেছি এবং যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে, এটাই হলো বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন হবে তখনই যখন যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট উন্নত হবে। এগুলো না হলে কোনো দেশের উন্নয়ন হতে পারে না। আমাদের শুধু সড়কপথের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে চলবে না। সড়কপথ, নৌপথ, রেলপথ এবং বিমান সবই লাগবে এবং আমরা সেভাবেই দেশটাকে সাজাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ৩ জুন সংসদে বাজেট উত্থাপনের প্রায় সব কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং সরকারি কর্মচারীদের কাজের গতি ও মনোযোগ বৃদ্ধির প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে অতীতের মতো ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’ সেই বিষয়টি বর্তমানে নেই। অন্তত সবার কাজের প্রতি একটা আন্তরিকতা আছে, দেশটাকে নিজের মনে করার এবং সেভাবেই কাজটি করার। সেই মানসিকতাটা তৈরি হয়ে গেছে, এটিই হচ্ছে সব থেকে আশার ব্যাপার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যত প্ল্যান প্রোগ্রাম আমরা করি না কেন সেটাকে বাস্তবায়ন করতে পারব যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করি। যদি নিজেদের কাজের সঙ্গে একেবারে বিলীন করে নিতে পারি এবং দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য নিজের যত রকম আত্মত্যাগ করা দরকার সেই আত্মত্যাগ করার মানসিকতা নিয়ে যদি আমরা কাজ করি, তবেই কিন্তু এটা কার্যকর হবে। তা না হলে এটা কার্যকর হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের আজকে যে মর্যাদা পেয়েছি সেটাকে ধরে রেখে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ আরো উন্নতি করবে। এই দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না। আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
"