প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৭ মে, ২০২১

ঈদে ছোটাছুটি নয় বেঁচে থাকলে দেখা হবেই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন তাকে সেখানেই ঈদ উদ্যাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার সময়ে বেঁচে থাকলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তো দেখা হবেই। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন, সেখানেই ঈদ উদ্যাপন করুন। আর যারা বিত্তশালী আছেন, তারা দুস্থদের সহযোগিতা করুন।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও জলযানের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্ত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী নতুন নৌপথ খননে সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান, প্রতি বছর নিয়মিত ড্রেজিং করার।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌযানে যাতায়াতকারী এবং পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। যখনই যারা নৌপথে চলাচল করেন, একটু সাবধানে চলবেন। যাত্রীদের সুরক্ষার পাশাপাশি চালকদের সুরক্ষার কথাও চিন্তা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আনরেজিস্টার্ড এবং ফিটনেসবিহীন নৌযান যেন চলতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি আমরা জলযানগুলো পরিচালনা করতে পারি, তাহলে কিন্তু দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় মেরিন অ্যাকাডেমি গড়ে তোলায় সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। আজ সেখান থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছি; যা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আর এই মহামারি সমগ্র বিশ্বব্যাপী চলছে, কাজেই এ সময়ে দেশের মানুষের যেন খাদ্যাভাব না হয়, কোনো কষ্ট না হয়; সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে এবং এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ মানুষকে সত্যিই খুব কষ্ট দিচ্ছে। সরকার একে প্রতিরোধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যথাযথ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে হতদরিদ্র ৩৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষের জন্য নগদ আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রলালয় থেকেও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

অবকাঠামো ও জলযানের মধ্যে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএর ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)’, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডব্লিউটিসির দুটি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ এবং ‘এমভি আইভী রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০০ বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন অ্যাকাডেমি স্থাপন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশে তৈরি ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজারসহ শতাধিক নৌযান একসঙ্গে উদ্বোধন ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।

‘নবসৃষ্ট অবকাঠামো ও জলযান’ নদীর নাব্যতা রক্ষা, নৌপথের উন্নয়ন, উপকূলীয় এলাকার যাত্রী পরিবহন ও দক্ষ নৌকর্মী গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

জানা গেছে, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আগামী ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০টি ড্রেজার এবং ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান প্রস্তুত করা হয়েছে। নৌপথ খনন ও নাব্য বজায় রাখার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৮টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে ২০টি ড্রেজার বিআইডব্লিউটিএর বহরে যুক্ত হয়ে মোট ৪৫টি ড্রেজারের শক্তিশালী ইউনিট সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারের বর্তমান মেয়াদে ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ও সি-ট্রাক বহরকে দক্ষ ও যুগোপযোগী করতে নবনির্মিত অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ এবং ‘এমভি আইভী রহমান’ নির্মাণ করা হয়েছে। জাহাজ দুটি কুমিরা-গুপ্তছড়া এবং চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ-হাতিয়া-বরিশাল রুটে চলাচল করবে। এ জাহাজ দুটির মাধ্যমে বছরে ৬ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কর্মকান্ডের ওপর একটি ভিডিওচিত্র পরিবেশিত হয়। খবর বাসস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close