নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ মে, ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২ কোটি টিকা চেয়েছে সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-প্রতিরোধী টিকা পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। তবে এখনো কোনো সুখবর মেলেনি। সরকার তাদের কাছে এক থেকে দুই কোটি ডোজ টিকা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। টিকা আনার জন্য মার্কিন দূতাবাস কী করছে সে সম্পর্কে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।

বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাকে বলে গেলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে। আমি রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, ভ্যাকসিন আমাদের অগ্রাধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে দেবে তখন যেন বাংলাদেশের কথা খেয়াল রাখে। এর জবাবে তিনি জানান, দিনক্ষণ বলতে পারব না, তবে টিকার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

কত ডোজ টিকা চেয়েছেন জানতে চাইলে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের অবিলম্বে প্রয়োজন ৪০ লাখ। তবে আমি তাদের কাছে এক কোটি থেকে দুই কোটি টিকা চেয়েছি। তারা কতটা দেবে সেটি জানি না, তবে চাইতে তো অসুবিধা নেই। আমরা যে চিঠিটা দিয়েছি তাতে ৪০ লাখ চেয়েছি। এর কারণ হচ্ছে যারা এরই মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ নেবেন, সেই প্রক্রিয়াটি চলমান রাখার জন্য।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ মিলিয়ন (৬ কোটি) ডোজ টিকা অতিরিক্ত রয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন টিকা চেয়েছি।’

সরকার এ বিষয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে ‘ইমিডিয়েট নিড’ হিসেবে ৪০ লাখ ডোজ টিকা চাওয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সংগ্রহের জন্য সরকার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভারতকে কোনো টিকা দেয়নি বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া রাশিয়া থেকে টিকা আনার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে কবে টিকা আসবে, কতটুকু আসবে সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে। তিনি বলেন, ‘তবে দেশটির সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষাপটে রাশিয়া একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যার ভিত্তিতে তারা ভ্যাকসিন দেবে বা কো-প্রোডাকশনে যাবে। সে প্রস্তাব এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখছে।’

বাংলাদেশে কোভিডপ্রতিরোধী টিকার জোগানে ঘাটতি থাকায় ২৬ এপ্রিল প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করার পর বুধবার টিকা নিতে নিবন্ধন বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকার বলছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির নিবন্ধন বন্ধ থাকবে। এ দিকে যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন ১৩ লাখ ডোজের বেশি টিকার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। মূলত ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ওপর নির্ভর করেই বাংলাদেশ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। এখন সরকার বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে জানানো হয়েছিল। ২০২০ সালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর সব মিলিয়ে বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close