নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ এপ্রিল, ২০২১

নতুন ৯৪ জন নিয়ে দেশে মৃত্যু ১০,০৮১

নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যু হয়েছে আরো ৯৪ জনের। সরকারিভাবে নতুন করে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ আরোপ করার দ্বিতীয় দিন গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ওই ৯৪ জনের মৃত্যু হলো। এ নিয়ে দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা হলো ১০ হাজার ৮১। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৯২ জনের শরীরে। এ নিয়ে দেশে কোভিড শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা হলো ৭ লাখ ৭ হাজার ৩৬২।

কোভিডে আক্রান্ত হয়ে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৯৬ জনের মৃত্যু হয়। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে দেশে এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা এটিই সর্বোচ্চ। গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৬৯ জনের। গত সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছিল ৮৩ জন। আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ১০ এপ্রিল শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৭৭ জনের। গত ৯ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৬৩ জনের। এর আগে ৮ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ২৫৭টি ল্যাবে ১৯ হাজার ৯৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গেছে ৪ হাজার ১৯২ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ২১ শতাংশ। একই সময়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৭৭০টি।

আগের ২৪ হাজার ৮২৫টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৫ হাজার ১৮৫ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয় ৬ হাজার ২৮ জনের শরীরে। আগের দিন সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড শনাক্ত হয় ৭ হাজার ২০১ জনের শরীরে। গত রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড শনাক্ত হয় ৫ হাজার ৮১৯ জনের। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৫ হাজার ৩৪৩ জনের। গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৪৬২ জনের কোভিড ধরা পড়েছিল। গত ৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয় ৬ হাজার ৮৫৪ জনের। ৭ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৬২৬ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছিল।

মার্চের শুরু থেকেই দেশে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও মাসের শেষ দিক থেকে তা বাড়তে থাকে দ্রুতগতিতে। গত বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড শনাক্ত হয় ৭ হাজার ৬২৬ জনের। দেশে এটিই এখন পর্যন্ত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগেও পরপর তিন দিন দৈনিক সাত হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ২১৩ জনের দেহে। গত ৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৭৫ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৮৭ জনের।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের ছয়জন, খুলনা বিভাগের তিনজন, বরিশাল বিভাগের দুজন, সিলেট বিভাগের একজন ও রংপুর বিভাগের একজন। হাসপাতালে ৯০ জন ও বাড়িতে চারজন মারা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৯৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৬৪ এবং নারী ৩০ জন। তাদের মধ্যে ৫২ জনই ষাটোর্ধ্ব বয়সি। অন্যদের মধ্যে তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং বাকি ২৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৫ হাজার ৯১৫ জন কোভিড রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ৯৭ হাজার ২১৪।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫১ লাখ ১৫ হাজার ৫৭২টি। দেশে মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ১৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

দেশে ‘লকডাউন’ নামে পরিচিতি পাওয়া প্রথম দফার ‘বিধিনিষেধ’ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ায় বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ‘কার্যকর’ লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই এবং এটি কার্যকর করতে সরকার প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিতে পারে এবং জারি করতে পারে কারফিউ। এরপর গত ১৪ এপ্রিল থেকে আট দিনের জন্য নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫টি পরীক্ষাগারে ৩২ হাজার ৯৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৬ হাজার ২৮ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ছিল ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫টি পরীক্ষাগারে ৩৪ হাজার ৯৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৭ হাজার ২০১ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৪৮টি পরীক্ষাগারে ২৯ হাজার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫ হাজার ৮১৯ জনের কোভিড পাওয়া যায়। শনাক্ত হার ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৪৩টি পরীক্ষাগারে ২৬ হাজার ৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৫ হাজার ৩৪৩ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ২০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত ৯ এপ্রিল শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ২৪৩টি ল্যাবে ৩১ হাজার ৬৫৪টি পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৭ হাজার ৪৬২ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত ৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ১৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৬ হাজার ৮৫৪ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত ৭ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৭ হাজার ৬২৬ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ৭ হাজার ২১৩ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ছিল ২১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। গত ৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ২৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ৭ হাজার ৭৫ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত ৪ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৭২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ৭ হাজার ৮৭ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ। গত ৩ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ৫ হাজার ৬৮৩ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত ২ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড ধরা পড়েছিল ৬ হাজার ৮৩০ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। গত ১ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ৬ হাজার ৪৬৯ জনের। শনাক্ত হার ছিল ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তার আগের দিন শনাক্ত হার ছিল ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গত ৬ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ৭ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৬৩ জনের। আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৬৬ জনের। গত ৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৫২ জনের হয়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৫৩ জনের। গত ৩ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৫৮ জনের। গত ২ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৫০ জনের। গত ১ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ৩১ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৫২ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৪৫ জনের। গত ২৯ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। এর আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ৩৫ জনের। এর আগে ২৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯, ২৬ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩, ২৫ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪, ২৪ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫, ২৩ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ এবং ২২ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল।

দেশে কোভিড শনাক্ত হার ২০ শতাংশের বেশি হয়েছিল গত বছরের মে মাসের শেষ দিকে। সেখান থেকে কমতে কমতে এ হার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। সম্প্রতি আবার বাড়ছে শনাক্ত হার। গত ২৬ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশে, ২৮ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশে, ২৯ মার্চ ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশে এবং ৩০ মার্চ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশে দাঁড়ায়।

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিডে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close