জিয়াউদ্দিন রাজু
ইউপি নির্বাচন
মন্দ ভাবমূর্তির কাউকে প্রার্থী করবে না আ.লীগ
পাঁচ ধাপে হওয়া পৌরসভা নির্বাচনে জিতে ফুরফুরে আওয়ামী লীগ আসছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও ভালো ফল পেতে চায়। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাইয়ে বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। দুর্নীতিবাজ, মামলার আসামি বা ভাবমূর্তি সংকট আছে এমন নেতাদের মনোনয়ন না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তৃণমূলে। একই সঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের পক্ষে সব নেতাকর্মীকে কাজ করার বার্তাও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে নানা কৌশল।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের এক সদস্য বলেছেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকটি সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সমস্যাগুলোর মধ্যে যাতে পড়তে না হয়, সেজন্য ইউপি নির্বাচনে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এবারের ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক। স্বচ্ছ ও ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতাকেই বাছাই করা হবে। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাইকে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। এবারও দলীয় প্রতীকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। তাই কেউ দলের বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন বার্তা তৃণমূলে পাঠানো হচ্ছে।’
আবদুুর রহমান আরো বলেন, ‘তবে এবার ইউপি নিবাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভোটারদের মনে ভোট প্রদানের আগ্রহ সৃষ্টিই আমাদের প্রধান কৌশল থাকবে। তৃণমূলে সেইভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃশ্যমান উন্নয়নের কারণে জনগণ এখন অপপ্রচারে কান না দিয়ে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। এই ধারা ইউপি নির্বাচনেও অব্যাহত থাকবে। এ কারণে এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ তৃণমূলে ইউপি সদস্যদের সঙ্গে জনগণের সরাসরি যোগাযোগ বেশি। এজন্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমে উপজেলা পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপর জেলাপর্যায়ে সবশেষ মনোনয়ন বোর্ডে প্রার্থীর যোগ্যতা যাছাই করা হবে। এতে করে যোগ্য প্রার্থীরাই দলের মনোনয়ন পাবেন।’
এদিকে, তৃণমূলের স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে গ্রামগঞ্জে সম্ভাব্যপ্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা শুরু হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন এবং দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ আসায় দলের নেতাদের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রবণতা আরো বেড়েছে। অনেকেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এবং প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এরই মধ্যে বলেছেন, পৌরসভা নির্বাচনের পরই শুরু হবে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সবাইকে এখন থেকেই সাংগঠনিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সেই নির্দেশনা পেয়েই ইউনিয়নের হাট-বাজারে প্রার্থী হওয়ার জানান দিচ্ছেন সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার প্রার্থীরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘরোয়া নির্বাচনী সভা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অনেক প্রার্থী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চলছে চোখে পড়ার মতো। এছাড়া দলীয় প্রতীক পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মে মাসের মাঝামাঝি দেশজুড়ে বড় পরিসরে ইউপি ভোট শুরু হবে। কয়েক ধাপে এই ভোট এবারও দলীয় প্রতীকেই হবে।
"