প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৯ মার্চ, ২০২১

সর্বাত্মক ধর্মঘটে মিয়ানমার

আরো ৩ বিক্ষোভকারী নিহত

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ধর্মঘট শুরু করেছে জনতা। গতকাল সোমবার দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনসহ অনেক শহরে দোকানপাট, কলকারখানা ও ব্যাংক বন্ধ রাখা হয়। হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান। এদিনও বিক্ষোভকারীদের হটাতে স্টান গ্রেনেড, টিয়ার শেল ও গুলি চালিয়েছে সেনা-পুলিশ। গুলিতে অন্তত ৩ বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। খবর আলজাজিরা ও চ্যানেল নিউজ এশিয়া অনলাইনের।

মিয়ানমারে দেশব্যাপী ধর্মঘট শুরু হয়েছে গণতন্ত্রপন্থি মানুষের। গতকাল ইয়াঙ্গুনে দোকানপাট, বিপণিবিতান, কারখানা ও ব্যাংক বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন কর্মীরা।

দেশটির নির্মাণ, কৃষি ও উৎপাদন খাতের অন্তত ৯টি শ্রমিক ইউনিয়ন গণতন্ত্র ও অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে পুনর্বহালের দাবিতে ‘মিয়ানমারের সব লোককে’ কাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইউনিয়নগুলো বলেছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ অব্যাহত রাখলে ‘মিয়ানমারের জনগণের শক্তিকে দমন করা’ সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করা হবে। তারা বিবৃতিতে বলেছে, ‘এখনই সময় আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষার পদক্ষেপ নেওয়ার।’

এদিকে ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভের পাশাপাশি দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ও অন্য বেশ কয়েকটি শহরে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।

ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাইতকিইনার রাস্তায় দুই বিক্ষোভকারীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ফিয়ার পন শহরে মারা গেছেন এক বিক্ষোভকারী। এ নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ ও ধর্মঘট দমনে সামরিক বাহিনী ৫০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করল।

মাইতকিইনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, ওই সময় নিকটবর্তী ভবনগুলো থেকে গুলি ছোড়া হলে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। মৃতদেহ সরাতে সাহায্য করা একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মাথায় গুলি লাগার পর দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় আরো তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ২০ বছরের একজন তরুণ বলেন, কতটা অমানবিক, নিরস্ত্র বেসামরিকদের হত্যা। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার আমাদের আছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর দাউইতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

এদিকে গতকাল বিক্ষোভকারীরা পতাকা এবং কিছু কিছু এলাকায় নারীদের পোশাক হাতেমাইন ও লুঙ্গি দুলিয়ে জান্তার নিন্দা জানায়। কোথাও কোথাও নারীদের ব্যবহৃত লুঙ্গি রাস্তার ওপর দড়িতে টাঙিয়ে রাখে বিক্ষোভকারীরা।

মিয়ানমারের ঐহিত্য অনুযায়ী নারীদের এসব পোশাকের নিচ দিয়ে যাওয়া পুরুষের জন্য অমঙ্গলজনক। পুলিশ ও সেনাদের গাড়ির গতি কমিয়ে দেওয়াই এসব তৎপরতার লক্ষ্য। এদিকে আইন প্রয়োগ করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনী হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টহল দিচ্ছে।

এক বিবৃতিতে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আগের দিন তারা ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে ‘অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’ গোষ্ঠী জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৮০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জান্তা কর্তৃপক্ষ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close