প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০১ মার্চ, ২০২১

দক্ষ জনশক্তি গড়তে শিক্ষায় জোর দিচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষাকে বহুমাত্রিক করতে কাজ করছে। টেক্সটাইল, ডিজিটাল, প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে, ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আধুনিক যুগে কী কী ধরনের বিষয় লাগে, সেদিকে লক্ষ রেখেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের যেসব এলাকায় যে ধরনের শিক্ষার গুরুত্ব বেশি, সরকার সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করে দিচ্ছে, যাতে সবাই শিক্ষাটা যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারে।

গতকাল রবিবার সকালে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এদিন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮২ শিক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ করা হয়।

কোভিড-১৯-এর কারণে দেশের সব স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী ৩০ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সক্ষম হব। এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীÑ সবাইকে টিকা নিতে হবে। নিয়ম মেনে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৫ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বাবদ বিতরণ করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে এবং প্রতিটি বিভাগীয় সদরে একটি করে মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে। সরকার জেলাপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছে যেন ছেলেমেয়েরা ঘরের খেয়ে বাবা-মায়ের চোখের সামনে থেকে পড়ালেখা করতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রাথমিকসহ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বাড়াতে ছাত্রছাত্রী উভয়ের জন্য বর্ধিত হারে উপবৃত্তি দেওয়া যাচ্ছে, ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লিঙ্গসমতা অর্জন করায় বাংলাদেশ বিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে তার সরকারের সাফল্য প্রসঙ্গে বলেন, “৯৬ সালে সরকারে আসার পর আওয়ামী লীগ নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ‘নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ শীর্ষক’ একটি প্রকল্প হাতে নেয়। সেখানে আনুষ্ঠানিক, উপানুষ্ঠানিক, মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এবং বয়স্ক শিক্ষার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন এনজিওসহ বিভিন্ন সংগঠনকে কাজে লাগানো হয় বয়স্ক শিক্ষার জন্য।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার মান বেড়েছে এবং সব পাবলিক পরীক্ষায় ফলও ভালো হচ্ছে। পাশাপাশি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাকার্যক্রমে আইসিটি বিষয় আবশ্যিক করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, ডিজিটাল কনটেন্ট ও অন্য বিষয়ে পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

পাহাড়, হাওরসহ বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলে শিক্ষা সম্প্রসারণে সরকার সেসব এলাকায় আবাসিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্গম, চরাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নিয়ে এ অঞ্চলগুলোয় শতভাগ শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’

সরকার যে এক শ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে, সেখানেও অনেক ‘টেকনিক্যাল হ্যান্ডস’ প্রয়োজন পড়বে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করতে পারলে তারা আমাদের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এ সময় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসরীন আফরোজসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা, সুনামগঞ্জের বিশম্বরপুর উপজেলা, বান্দরবান সদর উপজেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্র : বাসস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close