প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৯ জানুয়ারি, ২০২১

ট্রাম্পপন্থিদের সশস্ত্র মহড়া

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেক সামনে রেখে দেশটিতে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা। স্থানীয় সময় রবিবার ছোট ছোট দলে জড়ো হয়ে ট্রাম্প সমর্থকরা দেশজুড়ে আইন পরিষদগুলোর সামনে এ বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে অস্ত্র দেখা গেছে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে গত ৬ জানুয়ারির দাঙ্গা ও পাঁচজন নিহত হওয়ার পর ফের সশস্ত্র বিক্ষোভ করলেন ট্রাম্প সমর্থকরা। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসির।

আগামী ২০ জানুয়ারি অভিষেক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে দেশজুড়ে সশস্ত্র প্রতিবাদ হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল এফবিআই। সহিংস প্রতিবাদের আশঙ্কায় বহু নগর কর্তৃপক্ষ ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল, সড়কগুলোতে অবরোধ বসিয়ে হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করেছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন সতর্ক অবস্থার মধ্যেই টেক্সাস, ওরেগন, মিশিগান, ওহাইওসহ বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যের আইন পরিষদগুলোর সামনে প্রতিবাদ জানালেন ট্রাম্প সমর্থকরা।

অনলাইনে ট্রাম্পপন্থি ও কট্টর ডানপন্থি নেটওয়ার্কগুলোর করা পোস্টে ১৭ জানুয়ারি সশস্ত্র বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু এসব কর্মসূচির ডাক পুলিশের ফাঁদ হতে পারে এবং কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী অনুসারীদের এগুলোতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলে। শেষ পর্যন্ত অনেকটা বিচ্ছিন্নভাবেই প্রতিবাদকারীরা জড়ো হয়। ওহাইওর কলম্বাস শহরে রাজ্য পরিষদের সামনে ব্যাপক অস্ত্র সজ্জিত বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বুগালু বোয়িস মুভমেন্টের প্রায় ২৫ জন সদস্য ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে উৎখাত করতে চাওয়া শিথিলভাবে সংগঠিত এই গোষ্ঠীটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করা ‘বন্দুক রাখার অধিকার’ বিষয়ক সমাবেশে যোগ দিতে এখানে এসেছেন।

এদিকে মিশিগানে প্রায় দুই ডজন লোক, যাদের কয়েকজন রাইফেল বহন করছিলেন, লান্সিংয়ে রাজ্য পরিষদের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে; এ সময় পুলিশ তাদের ওপর সতর্ক নজর রেখেছে। এক প্রতিবাদকারী বলেন, ‘আমি এখানে সহিংসতা করতে আসিনি আর কেউ সহিংসতা দেখাবে না বলে আশা করছি।’

অস্টিনে টেক্সাসের ক্যাপিটল ভবনের সামনেও প্রায় এক ডজনের মতো প্রতিবাদকারী দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের কয়েকজনের কাছে রাইফেল ছিল। হারিসবার্গে পেনসিলভানিয়ার ক্যাপিটলের সামনে ট্রাম্পের একজন সমর্থক স্বল্প উপস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এখানে কিছুই হচ্ছে না।

বাইডেনের আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের দিনটিতে আরো প্রতিবাদ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিন ট্রাম্পের স্থলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বাইডেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক সামনে রেখে ওয়াশিংটন ডিসির অধিকাংশ এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। রাজধানীতে প্রচুর ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সিক্রেট সার্ভিসের অনুরোধে ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এরই মধ্যে বাইডেনের টিম যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে রাজধানীতে না আসার আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়রসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা জনগণকে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান দূর থেকে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।

দায়িত্বের প্রথম দিনে বাইডেন যেসব নির্বাহী আদেশ দেবেন, তার একটিতে যুক্তরাষ্ট্রে আবার প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা থাকবে। আরেকটিতে সাত মুসলিম দেশের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে নতুন নির্বাহী আদেশ দেবেন তিনি। এর পাশাপাশি এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ভ্রমণ এবং ফেডারেল সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে মাস্ক বাধ্যতামূলক করবেন বাইডেন। এসব নির্বাহী আদেশ দিতে অভিষেকের দিনই ব্যস্ত সময় কাটবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close