প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৮ জানুয়ারি, ২০২১

পুরস্কার তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী

চলচ্চিত্র থেকে শিশুরাও যেন শিখতে পারে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের জন্য এমনভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে, যাতে তারা সেখান থেকে ভবিষ্যৎ জীবন গড়ার অনুপ্রেরণা পায়। দেশের চলচ্চিত্র শিল্প নষ্ট হয়ে যাক সেটা সরকার কখনো চায় না। একসময় টেলিভিশন যুগের আবির্ভাবে সিনেমা শিল্প থমকে গেলেও এখন আবার সিনেমার যুগ ফিরে এসেছে। গতকাল রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।

শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এর মধ্য দিয়ে কিন্তু একটা শিশু তার জীবনটাকে দেখতে পারবে, জীবনটাকে তৈরি করতে পারবে, বড় হতে পারবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। শুধু বাংলাদেশেই না, এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানুষ সিনেমা দেখছে। হয়ত হলে যায় না, ঘরে বসে দেখে। কিন্তু হলেও আমাদের মানুষ টানতে হবে। আর মানুষ যাতে আসে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতন করতে দায়িত্ব পালন করায় চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ও প্রসারে জাতির পিতার নেওয়া ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ শিল্পের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপেরও কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মহামারির মধ্যে এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় নিজের দুঃখের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি তো আছি সব সময় আপনাদের পাশে। কারণ আমার বাবার হাতে গড়া এফডিসি। এই সিনেমা তৈরি করার যে উৎসাহটা, সেটা তিনি দিয়েছিলেন। কাজেই সেদিকটা মাথায় রেখে সব সময় আমি কাজ করি।

সমাজে শিল্পীদের একটি আলাদা সম্মান আছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আলোচনা করে দেখব অন্তত যারা আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন, তাদের সম্মানটা যেন তারা সব সময় পান, সেই ব্যবস্থাটা করার জন্য যা করণীয়, আমরা করব।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সিনেমা শিল্প অনেক অবদান রাখতে পারে। সেভাবেই আপনারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানুষকে আরো উদ্বুদ্ধ করা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন আমাদের ইতিহাসটা জানতে পারে, বিজয়ের ইতিহাস জানতে পারে এবং মানুষ যেন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আপনারা করবেন। এখন তরুণরা চলচ্চিত্র শিল্পে এগিয়ে আসায় ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আজ আছি কাল নেই। কিন্তু আমাদের তরুণদের সিনেমা শিল্পে আগ্রহ বেড়েছে। তারা এগিয়ে আসছে, আমরা মনে করি এটা ভালো লক্ষণ।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এবার ২৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন শিল্পী এবং কলাকুশলীকে ২০১৯ সালের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পদক, রেপ্লিকা, সম্মাননা চেক এবং সনদ বিতরণ করেন।

মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং কোহিনুর আক্তার সুচন্দা আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তথ্য সচিব খাজা মিয়া স্বাগত বক্তৃতা করেন। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে আজীবন সম্মাননা বিজয়ী মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, চলচ্চিত্র শিল্পে সংশ্লিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ কলাকুশলীরা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close