নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকিটের অপেক্ষায় প্রবাসীরা
সৌদি আরব থেকে রিটার্ন টিকিট কেটে যারা ছুটিতে আগে দেশে এসেছেন এখন তাদেরই টিকিট দেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। আপাতত নতুন করে কোনো টিকিট বিক্রি করবে না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। টিকিট বিতরণের ক্ষেত্রে ফ্লাইট বাতিলের তারিখ ধরে পর্যায়ক্রমে টিকিট রি-ইস্যু করা হবে। এ দিকে কাজে ফেরার উৎকণ্ঠা নিয়ে টানা অষ্টম দিনের মতো আবার কারওয়ানবাজারে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের টিকিটের আশায় গতকাল শনিবারও জড়ো হন প্রবাসীরা। টিকিটের নিশ্চয়তা না পেলেও টোকেনের আশায় কেউ বসে কিংবা কেউ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তাদের দাবি, এয়ারলাইনস তাদের টিকিটের নিশ্চয়তা দিক, টোকেন সরবরাহ করুক। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ভিড় করতে থাকেন প্রবাসীরা। এতে রাস্তায় জটলার সৃষ্টি হয়। তবে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে জটলা কমে যায়।
টিকিটের আশায় অপেক্ষমাণ প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অনেকেই নোয়াখালী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টিকিটের জন্য এসেছেন। কেউ কেউ গত শনিবার থেকে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কাজে ফেরার কোনো নিশ্চয়তা কেউ পাচ্ছেন না। টিকিটের জন্য টোকেন হাতে পেলেও কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে বলে জানান তারা।
নরসিংদী থেকে আসা শফিকুল ইসলাম পাঁচ বছর ধরে কাজ করেন সৌদি আরবের জেদ্দায়। পাঁচ দিন ধরে ঘুরছেন টিকিটের জন্য, কিন্তু মিলছে খালি হতাশা। তিনি বলেন, ‘ভিসার ডেট পার হয়ে গেছে। কবে বাড়বে জানি না। টিকিটের জন্য ঘুরতেছি পাঁচ দিন ধরে। এয়ারলাইনসের কাছ থেকেও কিছু জানতে পারছি না। আমরা একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। কাজে ফিরতে পারব কিনা জানি না।’
নরসিংদী থেকে আসা আরেক প্রবাসী কর্মী আবুল হাসেম ১৬ বছর ধরে কাজ করছেন সৌদি আরবে। তিনি বলেন, ‘কাজে ফিরতে না পারলে কাজ থাকবে না। বাড়িতে খাওয়ামু কী? এমনিতে পাঁচ মাস কাজ নাই। তাই বেতন নাই। ছুটিতে আইসা আটকা পড়লাম।’ মানিকগঞ্জের শাহীন ইসলাম জানান, ‘টোকেন কবে দিবে কখন দিবে, তাও জানতে পারলে হইতো। ঢাকায় বারবার আসা যাওয়াতে অনেক খরচ। এমনিতেই কাজ নাই বেতন নাই।’
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করার পর বাংলাদেশিদের সৌদি আরবে কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভিসার মেয়াদ, ফ্লাইট সংকট থাকায় কিছুটা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে প্রবাসীদের। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস বিশেষ ফ্লাইটের পাশাপাশি নিয়মিত ফ্লাইটে যাত্রী নেওয়া ?শুরু করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও প্রবাসীদের সৌদিতে ফেরাতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। তবে করোনা মহামারির মধ্যে সৌদিতে ফিরতে প্রবাসীদের মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধিসহ বেশকিছু শর্ত।
এদিকে বিমান জানিয়েছে, তারিখ অনুসারে যাত্রীদের টিকিট রি-ইস্যু করছে তারা। করোনাভাইরাসের কারণে ১৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে ১৬ মার্চ থেকে পরবর্তী সব শিডিউল ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায়। টিকিট বিতরণের ক্ষেত্রে বিমান ফ্লাইট বাতিলের তারিখ ধরে পর্যায়ক্রমে বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর টিকিট রি-ইস্যু করছে মাত্র।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘যাত্রীদের সুশৃঙ্খলভাবে টিকিট দিতে আমরা ফ্লাইট বাতিলের তারিখ ধরে টিকিট রি-ইস্যু করব। প্রথমে ১৬ মার্চে বাতিল হওয়া ফ্লাইটের টিকিট রি-ইস্যু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ১৭, ১৮, ১৯, ২০ মার্চ এভাবে তারিখ ধরে ধরে সিরিয়ালি টিকিট রি-ইস্যু করা হবে। বর্তমানে রিয়াদ ও জেদ্দায় ফ্লাইটের অনুমতি পেয়েছে বিমান। অনুমতি না পাওয়ায় দাম্মাম ও মদিনার রুটের যাত্রীদের এখনই টিকিট রি-ইস্যু করেছে না এয়ারলাইনসটি।
"